Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আলিপুরদুয়ারের ডিএম-কে ছুটিতে পাঠানোর পরে বদলির প্রক্রিয়াও শুরু

কারণ, তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা প্রশাসনের শীর্ষমহলের ব্যাখ্যায় ‘নজিরবিহীন’।

জেলাশাসক নিখিল নির্মল

জেলাশাসক নিখিল নির্মল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩০
Share: Save:

থানায় যুবককে পিটিয়ে বিতর্কের মুখে পড়া আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক (ডিএম) নির্মল কুমারকে বদলির প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য প্রশাসন। নবান্ন সূত্রের খবর, পরবর্তী পর্যায়ে তাঁর বিরুদ্ধে আরও বড় ধরনের পদক্ষেপ করা হতে পারে। কারণ, তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা প্রশাসনের শীর্ষমহলের ব্যাখ্যায় ‘নজিরবিহীন’।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করায় বিনোদ সরকার নামে এক যুবককে থানায় মারধর করছেন ডিএম। তাঁর স্ত্রীকেও ওই অভিযুক্ত যুবককে মারতে দেখা যায়। ভিডিয়োটি যথার্থ কি না, আনন্দবাজার তা পরীক্ষা করেনি। কিন্তু ওই ভিডিয়োর সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরে বিনোদকে মারধরের ঘটনাকে ‘পুলিশি হেফাজতে এক্তিয়ার বহির্ভূত ব্যক্তির অত্যাচার’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

প্রশাসনিক মহল জানাচ্ছে, রবিবারই ঘটনার কথা জানতে পারেন শীর্ষকর্তারা। ব্যাখ্যা চেয়ে এক আমলা সে দিনই ফোন করেন ডিএম-কে। সূত্রের দাবি, ঘটনার কথা স্বীকার করে নিখিল সংশ্লিষ্ট আমলাকে জানিয়েছিলেন, তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। বরং প্রশাসনিক দিক থেকে সম্ভাব্য যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। তার পরেই নিখিলকে ১০ দিন ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘জেলাশাসকই জেলাস্তরে সরকারের মুখ। তিনি আইনের ঊর্ধ্বে নন। তিনি ছাড় পেলে সর্বত্র ভুল বার্তা পৌঁছবে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, ছুটিতে পাঠানো ছাড়াও জেলাশাসককে বদলির প্রক্রিয়া শুরু করেছে নবান্ন। এখন সব জেলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। জেলাশাসক সেই কাজের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত। ফলে এখন তাঁকে বদলি করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন দরকার। সে জন্য ইতিমধ্যেই কমিশনকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য। অনুমতি পেলে বদলির নির্দেশিকা কার্যকর হবে।

সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ারের পরবর্তী জেলাশাসক হিসেবে হাওড়ার প্রাক্তন জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাসের নাম বিবেচনা করছে রাজ্য। এর উপরে পুলিশ জেলাশাসকের বিরুদ্ধে কোনও রিপোর্ট দিলে বা অভিযোগ দায়ের করলে তার ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত-সহ প্রশাসনিক বাকি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। পদক্ষেপ করতে পারে পুলিশও। আধিকারিক মহলের ব্যাখ্যা, গোটা ঘটনাটা ঘটেছিল ফালাকাটা থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায়ের উপস্থিতিতে। সেই কারণেই পুলিশের রিপোর্ট এই ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ। রিপোর্ট না-দিলে জবাবদিহি করতে হবে পুলিশকেও।

এ দিকে গোটা ঘটনা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE