বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিআইডি। কলকাতায় দলের কর্মসূচিতে ব্যস্ত আছেন জানিয়ে পরে সময় চেয়ে নেন বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার।
নদিয়ায় ফিরে শুক্রবার মাঝরাতেই রানাঘাটে জাতীয় সড়কের ধারে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন বিজেপির দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার। তবে তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক নয় বলে নার্সিংহোম সূত্রে শনিবার জানানো হয়েছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, শুক্রবার কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে দলীয় কনভেনশনে যান জগন্নাথ। এ দিন রানাঘাটে দলের জেলা দফতরে দলের বুদ্ধিজীবী সেলের অনুষ্ঠান থাকায় সেই কারণে তিনি এবং কয়েক জন নেতা তাড়াতাড়ি ফিরে আসেন। রাত ১১টা নাগাদ কোর্টমোড়ের কাছে দলীয় দফতরে বসে সাংগঠনিক কাজ করার সময়েই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে বিজেপি সুত্রের দাবি। বিজেপির অফিস সম্পাদক রাখাল সাহা বলেন, “দফতরে বসে কাজ করার সময়েই উনি বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। মাথা ঘুরে পড়ে যান। সুগার ও রক্তচাপের সমস্যা আছে তাঁর। প্রথমে ভেবেছিলাম, গ্যাসের কারণে হচ্ছে। কিন্তু গ্যাসের ওষুধ খেয়েও ব্যথা কমেনি। এর পরে তাঁকে দফতরের কাছেই ওই নার্সিংহোমে নিয় গিয়ে ভর্তি করি।’’
নার্সিংহোমের একটি সূত্রের দাবি, বুকে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হলেও জগন্নাথের হৃদ্যন্ত্রের যে ক’টি পরীক্ষা হয়েছে তাতে অস্বাভাবিকতা মেলেনি। আরও কয়েকটি পরীক্ষা করানো হবে। তবে তাঁর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। প্রথমে তাঁকে এইচডিইউ-তে রাখা হয়েছিল। এ দিন তাঁকে জেনারেল আইসিইউ-তে পাঠানো হয়েছে। তিনি অসুস্থ থাকায় আপাতত দৈনন্দিন কাজকর্ম সামলাচ্ছেন দলের তিন সাধারণ সম্পাদক।
সিআইডি সূত্রের দাবি, তৃণমূল বিধায়ক খুনে ধৃত মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুণ্ডারীর ফোনের কল লিস্ট ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, জগন্নাথের সঙ্গে তার কয়েক বার কথা হয়েছিল। সেই কারণেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। শুক্রবার যেতে না পারায় অন্য এক দিন তাঁকে ফের ডাকা হবে। বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে, জগন্নাথ তদন্তে সিআইডি-র সাথে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন ।
তবে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় সিআইডি-র ভূমিকায় ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ দেখছেন। শনিবার রানাঘাটে দলীয় দফতরে এসে তিনি দাবি করেন, “ভোটের আগে মানুষকে ভুল বোঝাতে আমাদের নেতা-কর্মীদের হেনস্তা করা হচ্ছে। সিআইডি আসলে তৃণমূলের অঙ্গুলিহেলনে চলে। যদি ঠিক মতো তদন্ত হয়, অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু তদন্তের নামে আমাদের নেতা কর্মীদের হেনস্তা করা যাবে না!“ তৃণমূলের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, “ওরা নিজেদের দলে খুঁজে দেখুক, হয়তো খুনিকে খুঁজে পেয়ে যাবে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “সিআইডি সত্য উদ্ঘাটনের জন্যই বিভিন্ন লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। বিজেপির যদি আইনকানুনের প্রতি ভরসা থাকে, তা হলে আশা করি তারা এগুলো মেনে চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy