Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
মনোজ খুনে ‘মাথা’র খোঁজ

সরানো হল ভদ্রেশ্বরের ওসিকেও

ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ উপধ্যায় হত্যাকাণ্ডের পরে একজন বাদে আর কোনও দুষ্কৃতীকে ধরতে না-পারা এবং খুনের কারণ নিয়েও কোনও দিশা না-পাওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। শুক্রবার সরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে এবং তার পরে তেলেনিপাড়া ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর প্রদীপ দাসকে।

দায়িত্বে: নন্দন পানিগ্রাহী।—নিজস্ব চিত্র

দায়িত্বে: নন্দন পানিগ্রাহী।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমছিল। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি উঠেছিল। দায়িত্ব নিয়েই ভদ্রেশ্বরের ওসি অনুদ্যুতি মজুমদারকে রবিবার সরিয়ে দিলেন চন্দননগরের নতুন পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার। ওই থানার নতুন ওসি হলেন নন্দন পানিগ্রাহী। তিনি এতদিন চন্দননগর আদালতে কোর্ট ইন্সপেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন।

ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ উপধ্যায় হত্যাকাণ্ডের পরে একজন বাদে আর কোনও দুষ্কৃতীকে ধরতে না-পারা এবং খুনের কারণ নিয়েও কোনও দিশা না-পাওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। শুক্রবার সরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে এবং তার পরে তেলেনিপাড়া ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর প্রদীপ দাসকে। এ বার কোপ পড়ল ভদ্রেশ্বরের ওসি অনুদ্যুতির উপরে। তাঁকে আপাতত পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করে দেওয়া হয়েছে।

কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েই অজয় কুমার শনিবার ভদ্রেশ্বরে যান। নিহত পুরপ্রধানের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। ওই পরিবারের পক্ষ থেকেও ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কমিশনারের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। ভদ্রেশ্বরের একাধিক কাউন্সিলর পুরপ্রধানের নিরাপত্তা নিয়ে ওসিকে তাঁদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু তিনি কোনও গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। সেই বিষয়টিও নতুন কমিশনারকে জানানো হয়। মনোজ খুনের পরে ভদ্রেশ্বরের সাধারণ মানুষ গত বৃহস্পতিবার দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে জিটি রোড অবরোধ করেছিলেন। সেখান থেকেও ওসিকে সরানোর দাবি উঠেছিল।

যে ভাবে চাপ বাড়ছিল, তাতে সব দিক খতিয়ে দেখেই নতুন কমিশনার ওসিকে দায়িত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেন। নতুন যাঁকে ওসি-র দায়িত্বে আনা হয়েছে সেই নন্দনবাবুও এক সময় ভদ্রেশ্বরের ওসি ছিলেন। সেই দিক থেকে নতুন পুলিশ কমিশনার ভদ্রেশ্বরে নন্দনবাবুর কাজের পুরনো অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন বলে ধারণা কমিশনারেটের কর্তাদের। এ নিয়ে অজয় কুমার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, তিনি বলেন, ‘‘এখনই ওই খুনের তদন্ত নিয়ে বলার মতো পরিস্থিতি আসেনি। পুলিশ সব দিক খোলা রেখে এবং সব সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই তদন্তে করছে।”

দলে এবং দলের বাইরে মনোজের ঘনিষ্ঠদের ভূমিকাও তদন্তে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে। কারণ মনোজ-ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের গতিবিধি সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, খুনের নেপথ্যে যে ‘বড় মাথা’ রয়েছে, সে যথেষ্ট প্রভাবশালী। কেবল সাধারণ দুষ্কৃতীরা কোনও কারণে মনোজকে খুন করবে, এটা তদন্তকারীরা মনে করছেন না। তাঁদের ধারণা, পুরপ্রধানকে নিশানা করার পর পুরো ঝাপটা ওই ‘বড় মাথা’ সামলে নেওয়ার সাহস জুগিয়েছিল দুষ্কৃতীদের।

কিন্তু কে তিনি?

সেটাই এখন তদন্তকারীরা বোঝার চেষ্টা করছেন। তবে পুরো বিষয়টি এখনই খোলসা করেননি তদন্তকারীরা। তাঁরা জানান, নানা সূত্র পাওয়া যাচ্ছে। কার্য-কারণ মিলিয়ে পুলিশ সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE