পাঁচ মাসে পঞ্চাশটিরও বেশি ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। তাই নড়নচড়ন নেই, এমন কথা বলা যায় না। কিন্তু ওই সব ঘটনার একটি ক্ষেত্রেও ‘অ্যাকশন টেকেন’ বা পূর্ণাঙ্গ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানাচ্ছে কমিশনের ওয়েবসাইট। প্রশ্ন উঠছে, ব্যবস্থা না-নিলে কাজটা আর কী হল?
অভিযোগ খারিজ করে কমিশনের দাবি, ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই চাপান-উতোরের মধ্যেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৎপরতার পরে শেষ পর্যন্ত বলরামপুরের সুপুরডি গ্রামের বাসিন্দা ত্রিলোচন মাহাতোর মৃত্যুর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে রাজ্য কমিশনও।
গত বুধবার বলরামপুরের সুপুরডি গ্রামের কাছে খুঁদিগোড়ায় গাছ থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ত্রিলোচনের। তার তদন্তের জন্য পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত। ১০ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছেন তিনি। কিন্তু বলরামপুরের ডাভা গ্রামের দুলাল কুমারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এ-পর্যন্ত রাজ্য কমিশনের তরফে কোনও পদক্ষেপের খবর নেই।
পঞ্চায়েত ভোট পর্বে বোমায় হাত নষ্ট হয়েছে হাড়োয়া-গোপালপুরের দক্ষিণ হালদারপাড়ার বাসিন্দা, তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া পৌলোমী হালদারের। তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ৬ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট পেশের জন্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। রাজারহাট নবীনচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট পরিচালনায় গিয়ে আক্রান্ত হন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার পার্শ্বশিক্ষক মনিরুল ইসলাম। কমিশন সেই বিষয়ে আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে। জানুয়ারিতে চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। সোমবার পর্যন্ত এই ধরনের ৫৬টি ক্ষেত্রে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের উল্লেখ রয়েছে কমিশনের সাইটে। কিন্তু একটি ক্ষেত্রেও ‘অ্যাকশন’ বা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা কমিশনের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়নি। যদিও কমিশন সূত্রের দাবি, ব্যবস্থা
নেওয়া হয়।
কমিশনের পদস্থ কর্তাদের বক্তব্য, কোনও ঘটনার রিপোর্ট আসার পরে তা খতিয়ে দেখে সত্যতা যাচাইয়ের পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কাছে নতুন রিপোর্ট চাওয়া হয়। এ ভাবেই রিপোর্ট নেয় কমিশন। তার পরে যখন ওই আধিকারিকেরা জানান, সংশ্লিষ্ট ঘটনায় চার্জশিট জমা পড়েছে। ফলে ওই বিষয়টি বিচারাধীন হয়ে যায়। কিন্তু ওয়েবসাইটে কোনও ব্যবস্থার উল্লেখ নেই কেন? তা হলে কি কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না!
‘‘ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হয়। হয়তো ওয়েবসাইটে আপলোড হয়নি,’’ বললেন এক কমিশন-কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy