Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দুই মৃত্যুরই রিপোর্ট চায় দিল্লি, চুপ রাজ্য কমিশন

গত বুধবার বলরামপুরের সুপুরডি গ্রামে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ত্রিলোচন মাহাতো (২১) নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়। আর শনিবার বিদ্যুতের হাইটেনশন তারের টাওয়ার থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ডাভা গ্রামের বাসিন্দা দুলাল কুমার (৩২)-এর দেহ।

মৃত বিজেপি কর্মী দুলাল কুমারের স্ত্রী ও মেয়ে।

মৃত বিজেপি কর্মী দুলাল কুমারের স্ত্রী ও মেয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০৪:২৫
Share: Save:

দু’দিনের ব্যবধানে পুরুলিয়ার বলরামপুরে দুই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। সেই জোড়া ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ইতিমধ্যেই রিপোর্ট চেয়েছে। কিন্তু দু’টি ঘটনার কোনওটির ক্ষেত্রেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশন রিপোর্ট চেয়েছে বলে জানা যায়নি। এমনকি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইটে অভিযোগের তালিকার পাশাপাশি স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের যে-তালিকা রয়েছে, বলরামপুরের ঘটনার কোনও তথ্য মেলেনি তাতেও।

গত বুধবার বলরামপুরের সুপুরডি গ্রামে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ত্রিলোচন মাহাতো (২১) নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়। আর শনিবার বিদ্যুতের হাইটেনশন তারের টাওয়ার থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ডাভা গ্রামের বাসিন্দা দুলাল কুমার (৩২)-এর দেহ। দুই যুবকই তাঁদের দলের কর্মী ছিলেন বলে বিজেপি নেতাদের দাবি। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কিন্তু রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এই বিষয়ে কোনও রিপোর্ট চেয়েছে, এমন খবর নেই। এ প্রসঙ্গে রবিবার রাজ্য কমিশনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এক কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

আরও পড়ুন: রিপোর্টেও আত্মহত্যা

বিজেপির ডাকা বন্‌ধে রবিবার বলরামপুরের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা।

গত শুক্রবার (১ জুন) পর্যন্ত রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইটে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের তালিকা আপডেট বা হালতামামি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে বুধবার ত্রিলোচনের দেহ উদ্ধারের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়নি। ব্যক্তিগত ভাবে অভিযোগ দাখিলের যে-তালিকা কমিশনের ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার (৩১ মে) পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে, সেখানেও বলরামপুরের ঘটনার কথা নেই। কমিশনের ওয়েবসাইটে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করার তালিকার পাশে ‘অ্যাকশন টেকেন’-এর স্তম্ভ ফাঁকা। সে-দিকেই আঙুল তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহল। তাদের প্রশ্ন, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপের জন্য কমিশন বিভিন্ন ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে, এটা তাদের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কোথাও যে বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়নি, সেটা ওই ওয়েবসাইটেই স্পষ্ট। তা হলে সেখানে অভিযোগে করে কী লাভ?

এই প্রশ্নও উঠছে যে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে বলরামপুর নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হলেও রাজ্যের ক্ষেত্রে অনীহা কেন?

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাল্টা প্রশ্ন, রাজ্য কমিশনের উপরে ভরসা করা যায় কি? ‘‘মানবাধিকার কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যানের পদ দীর্ঘদিন ফাঁকা ছিল। কমিশনের তরফে সে-ভাবে পদক্ষেপই করা হয় না,’’ বলেন দিলীপবাবু। তবে রাজ্য কমিশনে অভিযোগ করার কথা ভাবছে বিজেপি। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।’’

ছবি: সুজিত মাহাতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE