বন্যার জল নামতে শুরু করার পরে ক্ষয়ক্ষতির ছবিটা এখন ক্রমেই পরিষ্কার হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, বন্যার জেরে রাজ্যের মোট ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। জল নেমে যাওয়ার পরে ওই সব জমিতে কৃষকেরা কী চাষ করতে পারবেন, তা খতিয়ে দেখছে কৃষি দফতর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বীজ দেবে রাজ্য সরকার। বন্যায় জলে ডুবে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, বাজ পড়ে, দেওয়াল চাপা পড়ে মোট ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও পাঁচ জনের। হুগলির খানাকুলে এ দিনও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। জলে ডুবে দু’জন মারা গিয়েছেন। এক জন প্রাণ হারিয়েছেন সাপের কামড়ে। তবে মোট কত বাড়ি ভেঙেছে, তার পুরো হিসেব এখনও জেলা প্রশাসনগুলি নবান্নে পাঠাতে পারেনি।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে এ দিন বলা হয়— জল নামতে শুরু করার পরে বিভিন্ন এলাকায় যাতে রোগ না-ছড়ায় সে জন্য দুর্গত এলাকাগুলিতে চিকিৎসার সরঞ্জাম বিলি করা হবে। জল পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পরেই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলি মেরামতির কাজ শুরু করা হবে। নবান্ন সূত্রের খবর— বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণ নদীর নাব্যতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাঞ্চেতের ছাড়া জল যাতে এই তিন নদী আরও বেশি করে ধরে রাখতে পারে, সে জন্য সহজ শর্তে রাজ্যকে ১৮০০ কোটি ঋণ দেবে বিশ্বব্যাঙ্ক। অতিরিক্ত এক হাজার কোটি টাকা ঢালবে রাজ্য সরকারও।
ত্রাণে রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলে বিরোধীরা যে অভিযোগ করেছে, তার জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার বলেন, ‘‘টাকা তুলতে সিপিএম নাকি রাস্তায় নামবে? বন্যা এলেই কৌটো ঝাঁকানো আর গামছা পাতার রাজনীতি এ বার বন্ধ হোক। এখন মা-মাটি-মানুষের সরকার পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রেখেছে।’’
মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে কী ভাবে পলি তোলা সম্ভব তা ডিভিসি-কে খতিয়ে দেখতে বলেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রের খবর, বাঁধগুলির চারপাশে ‘রিং বাঁধ’ তৈরি করে জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর একটি প্রস্তাব রাজ্য সরকার ডিভিসি-কে দিয়েছে। ডিভিসি সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে সোমবার বলা হয়, জল কমতে শুরু করায় বিভিন্ন জেলায় ত্রাণ শিবির থেকে অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। হাওড়া ও হুগলিতে জল কমতে থাকলেও ঘাটাল শহরের জমা জল না-সরায় সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসন। মহকুমা হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরেও জল জমে রয়েছে। স্কুল, কলেজ-সহ এটিএমগুলিও জলের তলায়। দিন দশেক বন্ধ থাকার পর রবিবার বিকাল থেকে চালু হয়েছে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়ক। তবে রাস্তায় জল থাকায় এখনও বন্ধ ঘাটাল-পাঁশকুড়া এবং ঘাটাল-মেদিনীপুর (ভায়া নাড়াজোল) সড়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy