Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাশেম ফেঁসে গিয়েছে, দাবি প্রতিবেশীদের 

পড়শিদের দাবি, খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের কয়েক দিন পর থেকেই ‘বেপাত্তা’ হয়ে যান আবুল কাশেম। অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরে গ্রামের মানুষ দেখা পাননি তাঁর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:২২
Share: Save:

তাঁদের গ্রামের ছেলে জামাতুল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) ওরফে জেএমবির জঙ্গি হয়ে উঠেছে, মানতে নারাজ মঙ্গলকোটের দুরমুট গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। তাঁরা মনে করছেন, বছর বাইশের মহম্মদ আবুল কাশেম ‘ফেঁসে’ গিয়েছেন।

পড়শিদের দাবি, খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের কয়েক দিন পর থেকেই ‘বেপাত্তা’ হয়ে যান আবুল কাশেম। অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরে গ্রামের মানুষ দেখা পাননি তাঁর।

সোমবার সকালে কলকাতার ক্যানাল ইস্ট রোডের কাছ থেকে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করে। তদন্তকারীদের দাবি, তাঁর কাছ থেকে ‘জেহাদ’ সংক্রান্ত বেশ কিছু বই পাওয়া গিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ধৃত নিজেকে জেএমবি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলে তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন, দাবি তদন্তকারীদের।

এসটিএফ সূত্রে জানা যায়, খাগড়াগড় কাণ্ডে অন্যতম মাথা, মঙ্গলকোটের কৃষ্ণবাটী গ্রামের ইউসুফ, কুলসুনো গ্রামের আবুল কালাম ও কওসরকে গ্রেফতার করার পর থেকেই দুরমুট গ্রামের ওই যুবকের উপরে নজর ছিল। এক মহিলা কর্মীকে নিয়োগও করা হয়েছিল। তিনি কাশেমের বাড়ির উপরে নজর রাখতেন। পুলিশের এক কর্তার কথায়, “ওই কর্মী সাধারণ বেশে গিয়ে কাশেমের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলতেন। আর ছদ্মবেশে নজর রাখতেন জামাকাপড়ে। কতগুলি জামা, অন্তর্বাস, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি শুকোতে দেওয়া হচ্ছে, দেখা হত।’’

এনআইএ সূত্রেও জানা যায়, দুরমুট গ্রামেই ইউসুফের মামার বাড়ি। সেই সূত্রে দু’জনের পরিচয়। কাশেমের এক নিকট আত্মীয় শিমুলিয়া মাদ্রাসায় পড়তে যেত। সেখান থেকেই ওই ছাত্রীর বিয়েও হয়। তার পর থেকেই ইউসুফের সঙ্গে কাশেমের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাঁদের দাবি, কৃষ্ণবাটী গ্রাম ছাড়ার আগে ইউসুফ একটি ল্যাপটপ ও একটি ‘চিপ’ রাখতে দিয়েছিল আবুল কাশেমকে। ওই ‘চিপ’-এর খোঁজে ইউসুফ, কালামকে নিয়ে কাশেমের বাড়িতে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। এনআইএ-র এক কর্তা বলেন, “কাশেম শিমুলিয়া মাদ্রাসায় নিয়মিত যেত। দুরমুট গ্রাম ছাড়ার আগে বেশ কয়েকমাস মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি মাদ্রাসায় পড়তে যায় সে। তারও আগে মঙ্গলকোটেরই দু’টি মাদ্রাসায় পড়ে। সবটাই খোঁজ নিচ্ছি।’’

গ্রামবাসীরা অবশ্য এ সব মানতে রাজি নন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবুল কাশেমের পরিবার খুবই নিরীহ ও গরিব। বাবা আবুল কালাম প্রতিবন্ধী। ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। মা নাজমুন বিবিও শান্তশিষ্ট। এক পড়শির কথায়, “তিন বিঘা জমির ভরসায় সংসার চলে। ওঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়।” খবরে ছেলের কথা জানার পর থেকে বৃদ্ধা বাবা-মাও, চিন্তিত দাবি তাঁদের। আর এক পড়শির কথায়, “ওই পরিবারের কেউ কোনও দিন মশা মেরেছে কি না সন্দেহ। সেই পরিবারের ছেলে জেহাদি! মানতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

JMB Terrorist STF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE