Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

অর্থ লগ্নি মামলায় টাকা ফেরতের নতুন মডেল

কারখানায় উৎপাদন চালু রেখে সেই টাকায় প্রতারিত আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিক ভুয়ো অর্থ লগ্নি সংস্থা। ভারতে সম্ভবত এই প্রথম এমন শর্তে জামিন পেলেন বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার এক ডিরেক্টর।

স্যমন্তক ঘোষ
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৮ ০৩:৩৯
Share: Save:

কারখানায় উৎপাদন চালু রেখে সেই টাকায় প্রতারিত আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিক ভুয়ো অর্থ লগ্নি সংস্থা। ভারতে সম্ভবত এই প্রথম এমন শর্তে জামিন পেলেন বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার এক ডিরেক্টর। গত ৪ এপ্রিল ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ আদালতে তাঁকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন বিচারক কুমকুম সিংহ। যদিও এর পর অন্য মামলায় ফের তাঁকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপাড়া থানা। গত ২৮ তারিখ শ্রীরামপুর এসিজেএম আদালত একই শর্তে তাঁকে ফের জামিন দেয়।

গত ৬ মার্চ গ্রেফতার করা হয়েছিল ইএসবিআই গ্রুপ নামক একটি বেআইনি অর্থ লগ্নির সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর বিশ্বজিৎ পালকে। তাদের মূল ব্যবসা কাচ উৎপাদন। গ্রেফতার হওয়ার পর আইনজীবীর মাধ্যমে বিশ্বজিৎ জানান, কারখানায় উৎপাদন চালাতে দিলে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারবেন তিনি। কারণ, কারখানা নিলাম করে আমানতকারীদের সব টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না। বিশ্বজিতের দাবি, আনুমানিক ৫৫ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে তাঁকে। যদিও রাজ্যের আর্থিক দমন শাখা সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ১২০ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে বিশ্বজিৎকে।

ইএসবিআই-সহ বিভিন্ন বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার প্রতারিত আমানতকারীদের হয়ে মামলা করছেন আইনজীবী অরিন্দম দাস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই, আদালতের নজরদারিতে কারখানায় উৎপাদন হোক এবং লগ্নিকারীরা টাকা ফেরত পান। এটি আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার মডেল হতে পারে।’’

বস্তুত, আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি নিলামের ব্যবস্থা হলেও লাভ হচ্ছে না। ২০১৩ থেকে এমপিএস, টাওয়ার গ্রুপের মতো বহু সংস্থার সম্পত্তি নিলামের ব্যবস্থা হয়েছে। অথচ এখনও পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে এমপিএসের একটি মাত্র ফ্ল্যাট। সূত্রের খবর, ৯৮ লক্ষ টাকায় ফ্ল্যাটটি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু নিলামের জন্য বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য ব্যবস্থাপনায় সেবি’র এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। সেবি ইতিমধ্যেই সেই বিল জমা দিয়েছে। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ নতুন মডেলটিকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

আর্থিক অপরাধ দমন শাখার সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি যে ফের প্রতারণা করবেন না, সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন। ফলে এখনই এটিকে মডেল হিসেবে তাঁরা দেখতে চাইছেন না। অন্যদিকে, বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদার কমিটির সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘হাইকোর্টের নজরদারিতে উৎপাদন করে টাকা ফেরত দিলে কমিটির আপত্তি থাকার কথা নয়।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chit Fund Depositers Bail ESBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE