স্কুলের পরীক্ষায় মার্কশিট পেতে গেলে জানাতে হবে, বাড়িতে শৌচাগার আছে কি না। নির্মল বাংলা প্রকল্পকে সফল করতে এমনই ‘ফরমান’ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা শিক্ষা দফতরের। এর আওতায় পড়ছে জেলার জুনিয়র হাইস্কুল, হাইস্কুল এবং হাই মাদ্রাসাগুলো।
অভিভাবকদের অনেকের দাবি, এমন নির্দেশ শিক্ষা দফতর দিতে পারে না। তাঁদের বক্তব্য, শৌচালয়ের সঙ্গে পরীক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু স্কুল পরিদর্শক দফতর থেকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তাতে বলা হয়েছে, বাড়িতে শৌচালয় সম্পর্কিত তথ্য লিখিত ভাবে স্কুলে না দিলে ছাত্রছাত্রীদের মার্কশিট দেওয়া হবে না। বালুরঘাট হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক নারায়ণ সরকার জানান, ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। ফলের শংসাপত্র নিতে গেলে অভিভাবকদের লিখিত ভাবে জানাতে হবে, বাড়িতে শৌচাগার আছে কি না। যদি না থাকে, তাহলে জানাতে হবে, কবে শৌচাগার করবেন। তারপরেই মিলবে শংসাপত্র।
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সুবিধা ও বৃত্তি পেতে স্কুল পরীক্ষার মার্কশিট লাগে। জেলা স্কুল পরিদর্শক নারায়ণ সরকার বলেন, ‘‘মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পকে ১০০ শতাংশ সফল করতে ওই নির্দেশিকা।’’ বছর দু’য়েক আগে জেলায় জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে একই ফরমান জারি করে জেলা প্রশাসন। পরে উপর মহলের চাপে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে দেওয়া হয়। আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এমন নির্দেশিকায় লাভ হয়। অনেকেই শংসাপত্র না পাওয়ার আশঙ্কায় বাড়িতে শৌচাগার করে ফেলেছিলেন। এ বারও সেই একই লক্ষ্যে স্কুলে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
জেলার ৮টি ব্লকের ১৭টি চক্রের অধীনে ৩৩২টি হাইস্কুল, জুনিয়র হাইস্কুল ও হাই মাদ্রাসাকে সম্প্রতি স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, বাড়িতে শৌচাগার থাকলে, পঞ্চায়েত থেকে তার শংসাপত্র নিতে হবে। তপন ও কুমারগঞ্জ এলাকার কিছু অভিভাবকের অভিযোগ, শৌচাগার তৈরির জন্য এক বছর আগে পঞ্চায়েতে টাকা জমা দেন তাঁরা। কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। তা হলে ছেলেমেয়েরা কেন মার্কশিট পাবে না? অনেকে পঞ্চায়েতের তৈরি পাকা শৌচালয় পেয়েও বাসিন্দারা ব্যবহার করেন না বলেও নালিশ উঠেছে। বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, নিম্নমানের ইট ও সামগ্রী দিয়ে এমন শৌচালয় তৈরি হয়েছে, যা ব্যবহার করা যায় না।
তবু এমন নির্দেশ কি জেলা শিক্ষা দফতর দিতে পারে? দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) কৃত্তিবাস নায়েক বলেন, ‘‘শৌচাগার করতে চাপ তৈরি করতেই ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বচ্ছ ও সুস্থ সমাজের জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy