নিতিন গডকড়ী। —ফাইল চিত্র।
কাজ তাদের জাহাজে পণ্য তোলা আর জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা। এবং কমবেশি যাত্রী বহনও। কিন্তু দেশের বন্দরগুলিকে এ বার গরিবদের মাথায় ছাদ জোগাতে হবে। তাঁদের জন্য বাড়ি তৈরি করতে হবে। নির্মাণ করতে হবে স্মার্ট সিটি। জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর এমনই নির্দেশ!
জাহাজি মহলে বন্দরের উন্নতি মানে আরও বেশি পণ্য খালাস এবং পণ্য রফতানি করে বিদেশি মুদ্রা আয়। কিন্তু ১২-১৩ জুলাই বিশাখাপত্তনমে দেশের ১১টি সরকারি বন্দরের পরিচালকদের ডেকে গডকড়ী বলে দিয়েছেন, বন্দরের জমিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পছন্দের গরিব আবাসন, স্মার্ট সিটি গড়া হোক। প্রয়োজনে বন্দর পরিচালকেরা শুরু করুন পর্যটন প্রকল্পও। মন্ত্রীর এ-হেন অগ্রাধিকার জেনে কর্তারা বিস্মিত।
জাহাজ মন্ত্রকের খবর, বন্দরগুলির হাতে প্রচুর জমি রয়েছে। কলকাতা ও মুম্বই বন্দরের অনেক জমি আছে ওই দুই শহরের মাঝখানে। কিন্তু শহরের মাঝখানে বলে সেই সব জমি বন্দর উন্নয়নের কাজে লাগছে না। গডকড়ী তাই সেই জমির উপযুক্ত ব্যবহার চাইছেন। জাহাজ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘বন্দর তো পণ্য খালাস করবেই। কিন্তু দেশের সব বন্দরেরই অনেক জমি জবরদখল হয়ে রয়েছে। সেই জমিতে দখলদারদের জন্যই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বানিয়ে দিতে বলেছেন মন্ত্রী। বন্দরগুলি তাদের খালি জমিতে স্মার্ট সিটিও বানাতে পারে। তার টাকা মিলবে জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকেই।’’
কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের মূল কাজ পণ্য খালাসের পরিমাণ বাড়ানো। সেটাই করব।’’ তা হলে মন্ত্রীর নির্দেশের কী হবে? ‘‘উনি দেশের সব বন্দরের জন্য বলেছেন। আমরাও চেষ্টা করে দেখব, কিছু করা যায় কি না,’’ বলেন চেয়ারম্যান।
কিছু কি করা সম্ভব? বন্দরের হাতে থাকা জমির পরিমাণ কতটা?
বন্দর সূত্রের খবর, কলকাতা বন্দরের হাতে ৪৫০০ একর জমি রয়েছে। তার মধ্যে ১২০০ একর জমিতে দু’টি ডক তৈরি হয়েছে। ২০০০ একর জমি বন্দর-কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সংস্থাকে লিজ দিয়েছেন। ৮০ একর জমি ঝুপড়ি ইত্যাদির জন্য বেদখল গয়ে গিয়েছে। গ্যাংরার চর ও বলাগড়ের দ্বীপে বন্দি প্রায় ৭০০ একর। বাকি জমি ছড়িয়েছিটিয়ে আছে। বন্দর-কর্তারা জানান, হলদিয়ায় ২০০০ একর জমি শিল্প সংস্থাকে দেওয়ার জন্য রাখা আছে। জবরদখল হয়েছে আরও ১২০ একর।
এই অবস্থায় কোন জমিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি বা স্মার্ট সিটি হবে, ভেবে পাচ্ছেন না বন্দর-কর্তারা। তবে লাইটহাউস বা গঙ্গাকেন্দ্রিক কিছু পর্যটন প্রকল্প হাতে নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘মন্ত্রী মশাই চেয়েছেন। লোকসভা ভোটের আগে আমজনতা সুবিধা পায়, এমন কিছু করার কিছু চেষ্টা করতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy