ঘাসফুলের ব্যাজ লাগানো ভিড়ে স্টেশন চত্বর থিকথিক করছে। ভিতরে ফাঁকা নেই দেখেও জেনারেল কামরায় ওঠার দরজায় প্রবল ঠেলাঠেলি ব্যাজধারীদের। ভিড়ে বিরক্ত হয়ে কয়েক জন পা বাড়ালেন জেনারেলের পেছনে লাগানো সংরক্ষিত কামরার দিকে। তা দেখে ছুটে এলেন ব্যাজধারীদেরই কয়েক জন। প্রায় জোড় হাতে অনুরোধ করলেন, ‘‘দোহাই, ও দিকে যাবেন না। একটু অপেক্ষা করুন, পরের ট্রেনে ব্যবস্থা করে দেব।’’ অনুরোধে কাজ না হলে কড়া সুরে বলা হল, ‘‘উপরমহলে খবর গেলে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়া হবে কিন্তু।’’
ধর্মতলার সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড় নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনে এ ভাবেই সামলালেন দলের স্বেচ্ছাসেবকরা। শুধু দলেই নয়, ‘উপরমহল’ থেকে শৃঙ্খলা রাখতে কড়া নির্দেশ এসেছিল রেল পুলিশের কাছেও। বাড়তি বাহিনী ছিল স্টেশনে। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো ব্যাজ পরা শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের পুলিশ কর্মীরা ধমকে দিচ্ছেন, এমন দৃশ্যও দেখা গেল স্টেশনে।
শুরু থেকেই অবশ্য এতটা সুশৃঙ্খল ছিল না এনজেপি। অভিযোগ, এক) একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়া কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে গত সোমবার দার্জিলিং মেলের সংরক্ষিত কামরার যাত্রীদের বচসা হয়। দুই) কয়েক জন কর্মী-সমর্থক টিকিট ছাড়াই সংরক্ষিত কামরায় যাবে বলে হুমকি দিতে শুরু করে। তিন) সংরক্ষিত টিকিট থাকলেও যাত্রীদের কয়েক জন তৃণমূল কর্মীদের জায়গা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এই সব অভিযোগের খবর পৌঁছয় তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। রেল পুলিশের মাধ্যমেও বার্তা যায় রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরে। সূত্রের খবর, এর পরেই দল এবং প্রশাসন, দু’জায়গাতেই কড়া বার্তা আসে।
দেখা গেল এনজেপি এলাকার বাছাই করা তৃণমূল কর্মীরা রয়েছেন ভিড় সামলাতে। তৃণমূল কর্মী পল্লব আচার্য, সঞ্জীব সেনরা জানালেন, ‘‘শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ রয়েছে। প্রয়োজনে কড়া কথাও বলতে হচ্ছে। ’’ রেল পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘প্রয়োজনে ধমক দেওয়া তো বটেই এমনকী কাউকে আটক করে রাখা যাবে বলে জানানো হয়েছে।’’
গত বছর দু’দিন ধরে ধুন্ধুমার ঘটেছিল এনজেপি স্টেশনে। শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের দাপটে টিকিট থাকা সত্ত্বেও ট্রেন থেকে নেমে পড়েছিলেন দলে দলে যাত্রী। ঘণ্টাখানেক ট্রেন অবরোধও হয়েছিল স্টেশনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy