সেই একই ট্র্যাডিশন চলছে তৃণমূলে!
সাসপেনশনের চিঠির জন্য হাপিত্যেশ হয়ে বসে থাকলেও, সাসপেন্ড হওয়া নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে দলের তরফে চিঠি আর পৌঁছয় না! একদা চৌরঙ্গির বিধায়ক শিখা মিত্র সাসপেন্ড হন বছর দু’য়েক আগে। এখনও পর্যন্ত তিনি দলের তরফে সাসপেনশনের কাছে কোনও চিঠি পাননি। একই ঘটনা ঘটেছে ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত এবং হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহার সাসপেন্ড হওয়ার পরেও। তৃণমূলের তরফে তাঁদের কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে সাসপেন্ড হওয়ার পরে সিউড়ির বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষও এখন কোনও চিঠি পাননি। কবে তাঁরা চিঠি পাবেন তা নিয়ে শাসক দলের নেতৃত্বও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে চিঠি না পেলেও শীলভদ্র, শিউলি এবং স্বপন পরবর্তী পদক্ষেপ কী করবেন তার পরিকল্পনাতেই এখন ব্যস্ত।
ইদ ও রথযাত্রার পরেই তাঁরা চূড়ান্ত পদক্ষেপ করবেন বলে শীলভদ্র জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তো জানি না, কেন আমাদের সাসপেন্ড করা হল? সাসপেনশনের চিঠির জন্য বসে আছি। তবে দীর্ঘদিন তো বসে থাকতে পারব না! আমাদের যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের প্রতিও তো আমাদের একটা কর্তব্য আছে।’’ তিনি এবং শিউলি জানিয়েছেন, ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করতে তাঁদের যাঁরা নির্বাচিত করেছেন, এমন লোকজনের সঙ্গে তাঁরা কথাও বলছেন। একই অভিমত স্বপনবাবুরও।
সাসপেন্ড হওয়া তিন বিধায়ক তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ। শীলভদ্রদের মতো মুকুলকে তৃণমূল সাসপেন্ড না করলেও, দলের সঙ্গে এখন তাঁর দূরত্ব অনেকটাই। মুকুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই শীলভদ্র ও শিউলিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে দলের একাংশের খবর। তবে শাসক দলের পক্ষে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দলবিরোধী কাজ করার অভিযোগে ওঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। পার্থবাবুর বক্তব্যকে অবশ্য শীলভদ্ররা পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। কিন্তু মুকুল প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও, তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রেই জানা গিয়েছে, আলাদা দল করার প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। স্বপন, শীলভদ্র, শিউলি তো বটেই তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক থেকে বেশ কয়েক জন জনপ্রতিনিধি এবং দীপক ঘোষের মতো প্রাক্তন নেতারা মুকুলের নতুন সংগঠনে যোগ দিতে পারেন। এমনকী, বিজেপি, কংগ্রেস থেকেও নেতা-কর্মীদের যোগদানের সম্ভবনা আছে বলে তাঁরা দাবি করেছেন। রাজ্য সরকারের প্রাক্তন আমলা এবং তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক দীপকবাবুই মুকুলের নয়া সংগঠনের গঠনতন্ত্রের খসড়া রচনা করছেন বলে মুকুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানিয়েছেন।
মুকুলের নতুন সংগঠন কবে হতে পারে তা নিয়ে নানা জল্পনা রয়েছে। তবে মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের অনেকেই জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষ দিকে নতুন দল গঠনের জন্য তাঁরা দিল্লিতে আবেদন জানাবেন। তাঁরা জানিয়েছেন, নতুন দল করতে গেলে যে নিয়মকানুন আছে তা পূরণ করতে অসংখ্য নথিপত্র কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। এখন তাঁর প্রস্তুতি চলছে। মুকুল অবশ্য তাঁর নয়া সংগঠনের বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মুকুলের মন্তব্য, ‘‘সব বাজে কথা!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy