Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
NVF

এনভিএফ ধুঁকছে কর্মীর অভাবে, নয়া বাহিনী কেন

ডব্লিউবি এনভিএফের আত্মপ্রকাশ ১৯৪৮-র মার্চে, বঙ্গীয় জাতীয় রক্ষী দল (বিজেআরডি) হিসেবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৪৭
Share: Save:

অগ্রজ ভুগছে পুষ্টির অভাবে! তা হলে নতুনের আবাহন কেন? একই সঙ্গে উঠছে প্রশ্ন আর অভিযোগ।

নতুন মানে রাজ্য পুলিশের অধীনে উত্তরবঙ্গ, পাহাড় ও জঙ্গলমহলে তিনটি ব্যাটেলিয়ন গড়ছে সরকার। অথচ পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর (ডব্লিউবি এনভিএফ) মতো পুরনো বাহিনী কর্মীর অভাবে ধুঁকছে। সেখানে ২৫৯৭টি অনুমোদিত পদ থাকলেও এখন কর্মী-সংখ্যা ৪১৮ (মতান্তরে ৪১৬)। ২১৭৯টি পদ (মতান্তরে ২১৮১) শূন্য। সামরিক বা আধা-সামরিক বাহিনীর মতোই এনভিএফে কমান্ডান্ট, কমান্ডারের পাশাপাশি রয়েছে মেডিক্যাল অফিসার, মেল নার্সের মতো পদ। রয়েছে ধোপা, আর্দালি, রাঁধুনি, ফরাস, সুইপার, সাইকেল ম্যাসেঞ্জার, নাপিত-সহ নানা পদ। বাহিনীর সব থেকে কার্যকর ও বেশি পদ অগ্রগামীতে (কনস্টেবল)। সেখানে রাজ্যে ১৪৪০ অনুমোদিত পদ থাকলেও কর্মী আছেন মাত্র ৩২ জন। শূন্য পদ ১৪০৮। চুক্তিভিক্তিক প্রায় অর্ধেক পদে কর্মী নেই। অনুমোদিত পদ ১২,৮৭০, কর্মী আছেন ছ’হাজারের কিছু বেশি। দৈনিক ভাতা ৫৫০ টাকার মতো।

ডব্লিউবি এনভিএফের আত্মপ্রকাশ ১৯৪৮-র মার্চে, বঙ্গীয় জাতীয় রক্ষী দল (বিজেআরডি) হিসেবে। ওই বছরের নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নামে সেটি সরকারি স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশি শরণার্থীর ভিড় বাড়ছে। তাঁরা যাতে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে না-পড়েন, তাঁদের যাতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়— এই দু’টি দিক মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের সময়ে গড়ে ওঠে ডব্লিউবি এনভিএফ। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, সামরিক শিক্ষার মাধ্যমে দেশের যুব সমাজকে এমন ভাবে শৃঙ্খলাপরায়ণ করা, যাতে বাহিনীর সদস্যেরা জনজীবন, ধনসম্পত্তি নিরাপত্তা বিধানে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা বা রাজ্যের যে-কোনও জরুরি পরিস্থিতির উপযুক্ত মোকাবিলায় সক্রিয় হতে পারেন। তাই হালিশহর, কল্যাণী, কোচবিহার ও কার্শিয়াংয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলে সরকার।

একদা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, টালা পাম্প, টাঁকশাল পাহারায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিত এনভিএফ। জেলের বাইরের অংশে নজরদারিও চালাত তারা। সত্তরের দশকে গড়া হয় বিশ্বকর্মা-১ ব্যাটেলিয়ন (বিকেবিএন)। সদর দুর্গাপুরে। আশির দশকে তৈরি হয় বিকেবিএন-২। সদর কল্যাণীতে। এই সব তথ্য তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকের মতে, একটা ব্যাটেলিয়ন তৈরি করলেই হয় না। তার পরিকাঠামো গড়তে হয়। সরকারের মূল উদ্দেশ্য যদি হয় কর্মসংস্থান, পুরনো বাহিনীর শূন্য পদ পূরণ করলে তা সাধিত হত, মৃতপ্রায় বাহিনীটি জীবনীশক্তিও পেত। তাঁদের আশঙ্কা, কোচবিহারে নারায়ণী সেনা, পাহাড়ে গোর্খা এবং পশ্চিমাঞ্চলের জঙ্গলমহল ব্যাটেলিয়নও ভবিষ্যতে কর্মীর অভাবে ধুঁকবে না তো! কর্মী-শূন্যতার সূচনা বাম জমানাতেই হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। ‘‘দীর্ঘদিনের ব্যাটেলিয়নগুলিই কর্মীর অভাবে মৃত্যুমুখে। সেখানে মাত্র দু’মাসে নতুন তিনটি ব্যাটেলিয়নে নিয়োগের ঘোষণা নির্বাচনী চমক ছাড়া কিছু নয়,’’ বলছেন বিজেপি অনুমোদিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NVF No Recuitment New Police force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE