Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আতান্তরে যোগেশচন্দ্র

কিছু পাশ করিয়েও ঘেরাও সারা দিন

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সমাধানসূত্রেই পাশ নম্বর কমিয়ে দিয়েছিলেন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী দিবা কলেজের কর্তৃপক্ষও। তা সত্ত্বেও ঘেরাও এড়ানো গেল না।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩২
Share: Save:

ফেল করা সত্ত্বেও বিক্ষোভের মুখে পরের পরীক্ষার জন্য যোগ্য ঘোষণার ফল কী হতে পারে, হাতে হাতে তার প্রমাণ মিলল মহানগরের কলেজে।

আবদারটা দীর্ঘদিনের। আবদার করার যুযুধান পদ্ধতিটাও ফি-বছরের ঘটনা। ফেল করেও পাশ করিয়ে দেওয়ার সেই মারমুখী আবদারের কাছে কার্যত নতি স্বীকার করে স্নাতক পার্ট ওয়ানের অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পরবর্তী পরীক্ষায় বসার যোগ্য ঘোষণার ব্যবস্থা করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। একই সমাধানসূত্রে (?) পাশ নম্বর কমিয়ে দিয়েছিলেন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী দিবা কলেজের কর্তৃপক্ষও। তা সত্ত্বেও ঘেরাও এড়ানো গেল না। সকলকে পাশ করানোর দাবিতে বুধবার সেখানে অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষকদের দীর্ঘ ক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়। রাত ১০টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।

কলেজে তৃতীয় বর্ষের টেস্টে দেখা যায়, প্রায় ৪৪০ পড়ুয়ার মধ্যে পাশ করেছেন মাত্র ১১৭ জন। শুরু হয় বিক্ষোভ-আন্দোলন। মঙ্গলবার প্রায় সাত ঘণ্টা শিক্ষকদের আটকে রাখেন পড়ুয়ারা। বুধবার আলোচনা হবে বলে জানানোর পরে রাতের দিকে শিক্ষকদের বাড়ি যেতে দেওয়া হয়।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী দিবা কলেজে প্রবল দাপট টিএমসিপি-র। এ দিন সেখানে বৈঠকে ঠিক হয়, পাশ নম্বর কমিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী পাশ নম্বর কমিয়ে দিয়ে দেখা যায়, মোট ৩৫২ জন পাশ করছেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, বাকিদেরও পাশ করাতে হবে। কলেজের গেট বন্ধ করে তাঁরা অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষকদের আটকে রাখেন। তাঁরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেল করা পড়ুয়াদের ফল পুরনো নিয়ম মেনে নতুন করে ঘোষণার টাটকা উদাহরণও টানেন।

কলেজ সূত্রের খবর, পাশ করার জন্য প্রতিটি পত্রে ২০% পেতে হয়। এ দিনের বৈঠকে স্থির হয়, তা কমিয়ে ১৫% করা হবে। দেখা যায়, এর ফলে আরও বেশ কিছু পড়ুয়া পাশ করছেন। এর আগে দেখা গিয়েছিল, বহু পড়ুয়ার প্রয়োজনীয় হাজিরা নেই। বেশ কয়েক জনের হাজিরার সংখ্যা শূন্য! তবু তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার দিনগুলিকে হাজিরা হিসেবে দেখানো হয়েছে!

অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় বলেন, ‘‘পাশ নম্বর কমানোর পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়, অকৃতকার্য পড়ুয়াদের মধ্যে যাদের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ফল ভাল, বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের দেখা করতে হবে। এই আশ্বাসের পরে ঘেরাও তুলে নেওয়া হয়।’’

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারে বারেই পড়ুয়াদের বলছেন, মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের সমালোচনাই করেন তিনি। এ দিন যোগেশচন্দ্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে বক্তব্য জানার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে বারবার ফোন করে হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মেসেজ করেও জবাব মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE