গয়েশপুরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জেনোমিকস’-এ নোবেলজয়ী হ্যারল্ড ভারমাস। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
রবিবার সকাল থেকেই বিজ্ঞানের পড়ুয়া, শিক্ষক, গবেষকদের মধ্যে কর্মব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোর সঙ্গে কোনও ফারাক ছিল না ছুটির দিনের। কারণ, সকলে নোবেলজয়ী মানুষটিকে এক বার চোখের দেখা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জেনোমিকস’এ।
গত কয়েক দিন ধরেই কল্যাণী ও হরিণঘাটার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে চর্চা চলছিল নোবেলজয়ী মার্কিন বিজ্ঞানী হ্যারল্ড ইলিয়ট ভারমাসকে নিয়ে। যিনি ১৯৮৯ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পান। রেট্রোভাইরাল অঙ্কোজিনের সেলুলার অরিজিন আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসাবে ওই বছর নোবেল পান তিনি। রবিবার, সেই বিজ্ঞানীই এসেছিলেন গয়েশপুরের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জেনোমিকস’-এ। ঘণ্টা দুয়েকের উপস্থিতিতে ওই বিজ্ঞানী প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখেন, সেখানকার মিউজিয়ামে যান, অধিকর্তার সঙ্গে কথা বলেন এবং সব শেষে বক্তৃতা করে মন জয় করে নেন শ্রোতাদের।
এ দিন অধ্যাপক হ্যারল্ড ভারমাস তাঁর ঘণ্টাখানেকের বক্তব্যে বহু জরুরি বিষয় তুলে আনেন। গত কয়েক দশক ধরে দেশ-বিদেশে ক্যানসারের গবেষণার বিবর্তনের প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করেন তিনি। বিজ্ঞানের এই সাফল্য নিয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত।
হ্যারল্ড বলেন, ‘‘এক সময় চিকিৎসকেরা বুঝতেই পারতেন না কোন ক্যানসার কী কারণে হয়। এখন আর সে যুগ নেই। ক্যানসারের জন্য জিন কতটা দায়ী, সেটা অবধি এখন জানা যাচ্ছে।’’
এ দিন ওই প্রতিষ্ঠানের বাইরে সকাল থেকেই উৎসাহী মুখের ভিড় জমতে শুরু করে। আয়োজকদের তরফে বেশ বড় একটি মঞ্চ বানানো হয়। সকাল থেকেই সেখানে আইসার-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা ভিড় করেন। সকলের মধ্যেই সামনে থেকে ওই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীকে দেখার, তাঁর কথা শোনার আগ্রহ ছিল।
আইসারের ছাত্র অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশ অনেকটা আগেই এসে হাজির হয়েছিলেন এ দিন।
উত্তেজিত অঙ্কন বলেন, ‘‘আইসার-এ অনেক বড় বড় মাপের বিজ্ঞানীরা আসেন। কিন্তু তাই বলে একজন নোবেলজয়ীর বক্তব্য শুনতে আসব না, এটা হতে পারে না!’’ তাঁর দাবি, এমনিতেই ক্যানসারের জন্য জিন কতটা দায়ী, তা নিয়ে দেশ-বিদেশে নিরন্তর গবেষণা চলছে। আর এই গবেষণার উদ্দেশ্যেই বছর আট আগে এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি হয়। সেখানে এত বড় মাপের একজন বিজ্ঞানীর উপস্থিতি অন্য মাত্রা যোগ করবে বলেই তাঁর আশা।
প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা সৌমিত্র দাস বলেন, ‘‘জিনের সঙ্গে ক্যানসারের সম্পর্ক নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু ক্যানসারের ক্ষেত্রে কোন কোন জিন দায়ী, তা আবিষ্কার করতে পেরেছি। এ বিষয়ে দেশ-বিদেশের নামী জার্নালে লেখাও বার হয়েছে।’’
এ দিন ক্যানসারের গবেষণায় এই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার প্রশংসা করেন নোবেলজয়ীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy