Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ফ্ল্যাটে টাকা রাখেন ভারতী-ঘনিষ্ঠ, বলছে সিআইডি

সিআইডি সূত্রে বুধবার বলা হয়, ফ্ল্যাটটি আগে ভারতীর স্বামী এম এ ভি রাজুর নামে ছিল। পরে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি সেটি কিনে নেন।

মাদুরদহ আবাসনে কেয়ারটেকারকে নিয়ে সিআইডি তল্লাশি। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

মাদুরদহ আবাসনে কেয়ারটেকারকে নিয়ে সিআইডি তল্লাশি। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৫:০১
Share: Save:

মঙ্গলবার মাদুরদহের আবাসনের যে ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ বা তাঁর স্বামীর নয় বলে জানাল সিআইডি। তবে ওই ফ্ল্যাটে টাকা রাখার পিছনে ভারতীর দেহরক্ষীর হাত রয়েছে বলেও তাদের দাবি।

সিআইডি সূত্রে বুধবার বলা হয়, ফ্ল্যাটটি আগে ভারতীর স্বামী এম এ ভি রাজুর নামে ছিল। পরে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি সেটি কিনে নেন। কিন্তু তিনি ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন না। তার চাবি থাকত কেয়ারটেকার রাজমঙ্গল সিংহের কাছে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জেরায় রাজমঙ্গলই জানায় দিন কুড়ি আগে ওই ফ্ল্যাটে টাকা রাখা হয়েছে। কে সেই টাকা রেখেছিল, সে ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও একান্তে সিআইডি কর্তাদের দাবি, রাজমঙ্গল স্বীকার করেছেন যে ভারতীর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডল ও তিনি মিলে ওই টাকা রেখেছেন। সুজিত মাঝেমধ্যে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধারের পর ভারতী, রাজু, সুজিত ও রাজমঙ্গলের বিরুদ্ধে আনন্দপুর থানায় অভিযোগ করেছেন বিশ্বজিৎবাবু।

সিআইডি সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটের এক কোণায় থাকা একটি আলমারির ভিতরে চারটি ব্যাকপ্যাকে নগদ ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ছিল। সেগুলিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিল রয়েছে। কার অ্যাকাউন্ট থেকে এই টাকা তোলা হয়েছিল তার হদিস পেতে ওই ব্যাঙ্কের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।

বুধবার সিআইডির দল ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয় মাদুরদহের ওই আবাসনের আরও দু’টি ফ্ল্যাটে। যদিও সেখান থেকে কী পাওয়া গিয়েছে তা জানাতে চাননি গোয়েন্দাকর্তারা।

ভারতীদেবী এখন ভিন রাজ্যে। সেখান থেকে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সিআইডির অফিসারেরা মাদুরদহের আবাসনে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছেন। ওই কেয়ারটেকারকে অবৈধ ভাবে আটক করে চাপ দিয়ে বয়ান লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’ প্রশাসনের শীর্ষস্তরকে বিঁধে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এটা কি ছ’বছর ধরে জঙ্গলমহলকে সুন্দর করে তোলার প্রতিদান? সিআইডির কাছে প্রশ্ন, তল্লাশির নামে যা করলেন তা কি আইনকে তুলে ধরতে, নাকি বিশেষ কাউকে সন্তুষ্ট করতে?’’ যে মামলার ভিত্তিতে এত তল্লাশি, তা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন ভারতী। এক জন ফাস্ট ফুড বিক্রেতা কী ভাবে এত সোনা পেলেন সেই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দল বেঁধে তল্লাশিতে বেরিয়ে পড়লেন! অভিযোগ যে হবে তা কি আগে জানা ছিল?’’

রাজুর নাকতলার বাড়ি থেকে সোনার গয়না, বিগ্রহ এবং জমিবা়ড়ির নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করার পরে তাঁকে এ দিন তলব করেছিল সিআইডি। কিন্তু সকালে তাঁর আইনজীবী ভবানী ভবনে গিয়ে জানান, অসুস্থতার কারণে রাজু হাসপাতালে ভর্তি। তাঁকে সাত দিন সময় দেওয়া হোক। কিন্তু রাতে সিআইডি ফের নোটিস জারি করে তাঁকে আজ, বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় হাজির হতে বলে। এর পর রাজুর আইনজীবী জানান, রাজুর মেডিক্যাল রিপোর্ট সিআইডির কাছে জমা দেবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE