রাজনৈতিক টানাপড়েনে পাহাড়ের পরিস্থিতি ঘোরালো। আর বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উত্তরবঙ্গ ও অসমের সঙ্গে কলকাতার ট্রেন যোগাযোগ এখনও স্বাভাবিক নয়।
তাই এ বার পুজোয় পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় পিছিয়ে পড়েছে পাহাড়। তালিকার শীর্ষে সেই পুরী। তার পরে রয়েছে দিল্লি, হরিদ্বার, মুম্বই ও দক্ষিণ ভারত। চাহিদা বুঝে ওই সব জায়গায় হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা ও সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে নির্ধারিত ট্রেনের বাইরে আরও ২৮২টি পুজো স্পেশ্যাল চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব রেল।
রেল সূত্রের খবর, পুজোর বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। ওই সব অতিরিক্ত ট্রেন চলবে পুজোর পরে, অক্টোবরের শেষ দিন পর্যন্ত। উৎসবে পুরীর আকর্ষণ তুঙ্গে ওঠে প্রতি বছরেই। এ বার সেটা আরও বেশি বলে জানাচ্ছে রেল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এ বছর ভিড় সামলাতে শুধু পুরীর দিকেই অতিরিক্ত সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে।’’ পূর্ব রেলও যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে পুরীর দিকে দু’জোড়া অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করেছে। নিত্যদিনের নির্ধারিত ট্রেনগুলি তো আছেই।
আরও পড়ুন:গুরুর নামে পুরস্কার চালু করে বিতর্কে মোদী
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানান, দিল্লি, হরিদ্বার, দেহরাদূন তো আছেই, তার সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু ট্রেন দেওয়া হয়েছে জম্বু-তাওয়াই, জয়পুর, রক্সৌল এবং অজমেরের দিকে। সব মিলিয়ে পূর্ব রেল চালাবে ১৪২টি অতিরিক্ত ট্রেন। দক্ষিণ-পূর্ব রেল পুরী ছাড়াও অতিরিক্ত ট্রেন চালাচ্ছে, চেন্নাই-সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এবং মুম্বই, জবলপুর, রাজকোট ও জয়পুরের দিকে। সব মিলিয়ে ১৪০টি অতিরিক্ত ট্রেন চালাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। বিভিন্ন ট্রেনে আসন সংরক্ষণের তথ্য যাচাই করে রেলকর্তারা বলছেন, ভিড় বেশি পুরীর দিকে। পিছিয়ে নেই দিল্লিও।
বন্যায় ব্যাপক বিপর্যয়ের জেরে পুজোয় ক্ষতি হল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের। সেই ক্ষতির আঁচ কিছুটা হলেও এসে লাগছে পূর্ব রেলের ভাঁড়ারে। কারণ, বন্যার জেরে টানা এক মাস উত্তরবঙ্গ ও অসমের দিকে ট্রেন চলেনি। ফের ট্রেন চলাচল শুরু হলেও এখন তা স্বাভাবিক হয়নি। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ের অস্থিরতা। এর জেরে পুজোয় বেশির ভাগ পর্যটকই উত্তরবঙ্গ ও অসমের দিকে থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। আর তাতেই ক্ষতির মুখে রেল।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা জানাচ্ছেন, বন্যায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। মালপত্র পরিবহণ করতে না-পারার জন্য ক্ষতি হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। টিকিট বাতিল এবং ট্রেন না-চলায় মোট ক্ষতি হয়েছে দেড়শো কোটি টাকা। একই কারণে ট্রেন না-চলায় পূর্ব রেলের প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy