Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘চিকেন নেক’ রক্ষায় এনএসজি-র মহড়া

মঙ্গলবার সারা রাত একই মহড়া চলে বাগডোগরা বিমানবন্দরে। রাত ১০টার পর জঙ্গি হানা, অপহৃত বিমান থেকে যাত্রীদের উদ্ধার, টার্মিনাল ভবনে বিস্ফোরক নিয়ে ঢুকে পড়া জঙ্গিদের ‘গ্লক’, ‘হেকলার অ্যান্ড কোচ’, ‘বেরেট্টা’ বা ‘এসআইজি’ মতো আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে শুইয়ে দিলেন কম্যান্ডোরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫১
Share: Save:

বেজে উঠল থানার ফোন। ফোন নামিয়েই ওসি ছুটলেন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের সায়েন্স সেন্টারে। খবর, সেন্টারের দখল নিয়েছে কোনও জঙ্গি সংগঠনের সশস্ত্র সদস্যরা। বোমা, আধুনিক অস্ত্র নিয়ে ভিতরে ঢুকে বন্দি করা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের। এক ঘণ্টায় এলাকা মুড়ে ফেলল পুলিশ।

কিন্তু পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেবেন, তা ভেবে ঘাম ছুটে গিয়েছিল প্রশাসনের কর্তাদের। খবর পাঠানো হল, দেশের সব থেকে দক্ষতাসম্পন্ন ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড বা এনএসজিকে। ঘণ্টা দেড়কের উড়ান। কলকাতার মধ্যমগ্রামের হাব থেকে শিলিগুড়ি এলেন এনএসজি কম্যান্ডোরা। ৭০ জনের দল দখল নিল এলাকার। উড়ল ড্রোন। রুদ্ধশ্বাস কোনও হলিউডি অ্যাকশন ছবির মতো এনএসজি কম্যান্ডোদের ২০ মিনিটের অপারেশন। ছয় জঙ্গির দেহ আসল বাইরে। বিপদ কাটল শিলিগুড়ির।

গোটাটাই সাজানো। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, শিলিগুড়ি দেশের ‘চিকেন নেক’ বলেই পরিচিত। ভুটান, চিন, নেপাল, বাংলাদেশের মতো দেশ ঘিরে রয়েছে। পাহাড়ে অস্থিরতা, বিস্ফোরণ, একে সিরিজের অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মাওবাদী-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের নানা গোষ্ঠীর সক্রিয়তা বেড়েছে। তাই এখানে আচমকা জঙ্গি হানা হলে কী হবে, তা ভেবেই এনএসজি-র মহড়ার বন্দোবস্ত হয়। গত বুধবার গভীর রাতে সায়েন্স সেন্টারে সেই মহড়া দিলেন দেশের এলিট কম্যান্ডোরা। উত্তরবঙ্গে প্রথমবার এমন ঘটনা।

মঙ্গলবার সারা রাত একই মহড়া চলে বাগডোগরা বিমানবন্দরে। রাত ১০টার পর জঙ্গি হানা, অপহৃত বিমান থেকে যাত্রীদের উদ্ধার, টার্মিনাল ভবনে বিস্ফোরক নিয়ে ঢুকে পড়া জঙ্গিদের ‘গ্লক’, ‘হেকলার অ্যান্ড কোচ’, ‘বেরেট্টা’ বা ‘এসআইজি’ মতো আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে শুইয়ে দিলেন কম্যান্ডোরা। এর দু’দিন আগে রাতে জঙ্গলে ঘেরা ‘বেঙ্গল সাফারি পার্কেও’ জঙ্গিহানা মোকাবিলার মহড়া দিয়েছে এনএসজি। প্রতিদিনই গভীর রাতের মহড়াগুলিতে সহযোগিতায় রাখায় হয় বাগডোগরা, মাটিগাড়া ও ভক্তিনগর থানা-সহ কমিশনারেটের কর্তাদের। অভিযানে অংশ নেন কয়েক জন পুলিশ অফিসারও। তাঁরা জানান, যে আগ্নেয়াস্ত্র, সরঞ্জাম দেখলেন, তাঁরা এত দিন তার নামই শুনেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE