লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএম সমঝোতার দিকে এগোলে তাদের অন্য পথ ভাবতে হবে বলে এ বার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গিয়ে জানিয়ে দিয়ে এল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। আবার একই দিনে পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত প্রসেনজিৎ বসুদের সংগঠনের আয়োজনে রাজভবন অভিযানে সামিল হলেন ফ ব বিধায়ক ও যুব লিগের নেতা আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। এই ঘটনাপ্রবাহের জেরে লোকসভা নির্বাচনের আগে বামফ্রন্টের মধ্যে সিপিএম-ফ ব’র মধ্যে নতুন টানাপড়েন শুরু হল।
পঞ্চায়েত ভোটে পুরুলিয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের মতো কিছু জেলার ফলাফল দেখিয়ে ফ ব-র রাজ্য কমিটি বলেছিল, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে বামেদের কোনও লাভ হচ্ছে না। বরং, বামেদের ভোট পেয়ে কংগ্রেস লাভবান হচ্ছে। ফ ব-র মতে, কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমঝোতা না করেই ভিক্টরের চাকুলিয়ায় বামেরা পঞ্চায়েতে একমাত্র ভাল ফল করতে পেরেছে। গোটা রাজ্যে জেলা পরিষদে বামেদের তরফে ফ ব একমাত্র জেলা পরিষদ আসনটি জিতেছে উত্তর দিনাজপুরেই। এই বিশ্লেষণই সোমবার আলিমুদ্দিনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেবদের কাছে পেশ করেছেন নরেন চট্টোপাধ্যায়, হাফিজ আলম সৈরানি, বরুণ মুখোপাধ্যায়েরা। সেই সঙ্গেই নরেনবাবুরা জানিয়ে দিয়েছেন, লোকসভা ভোটে ফের কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হলে তাঁরা বিকল্প কোনও পথ ভাববেন। আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, সুকুমার ঘোষেরা এ দিনই সিপিএমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অবশ্য এমন কট্টর মনোভাব দেখাননি।
বামফ্রন্টের মধ্যে অতীতে সিপিএমের সঙ্গে ফ ব-র বহু টানাপড়েন হয়েছে অশোক ঘোষের আমলে। কিন্তু বাইরে বিবৃতি দিলেও সিপিএম নেতৃত্বের মুখোমুখি বসে কোনও শরিক নেতৃত্বের এ ভাবে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি বিরল। বিমানবাবুরা অবশ্য বৈঠকে বলেছেন, তাঁরা এখন আন্দোলনেই নজর দিচ্ছেন। লোকসভা ভোটের রণকৌশল বা আসন বণ্টন, সব কিছুই বামফ্রন্টে আলোচনা হবে যথাসময়ে। তবে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির একজোট হয়ে লড়াইয়ের সময়ে ফ ব-র আচরণে সিপিএম নেতৃত্বের বড় অংশই ক্ষুব্ধ। এর আগে কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়া কোচবিহার লোকসভা উপনির্বাচনে লড়ে ফ ব তৃতীয় হয়েছে। এখন সিপিএম নেতৃত্বের উষ্মা বাড়িয়েছে প্রসেনজিৎদের সঙ্গে যুব লিগের দহরম মহরম! প্রসেনজিৎদের ‘জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন’ শীর্ষক মঞ্চের তরফে বৃষ্টির মধ্যেই শহরে মিছিল করে রাজভবনে দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে ১০ দিনের মধ্যে সদর্থক পদক্ষেপ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy