Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিগৃহীত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুরনো মারধরের নালিশ প্রকাশ্যে

সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নামে কোন্নগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজের ওই শিক্ষক বর্তমানে শ্রীরামপুরের একটি আবাসনে থাকেন।

নিগৃহীত সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং অভিযোগকারী: মনসারাম ঘোষ।

নিগৃহীত সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং অভিযোগকারী: মনসারাম ঘোষ।

প্রকাশ পাল
হরিপাল শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০৩:১০
Share: Save:

গত সাত বছরে তাঁরা কেউ পুরনো অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেননি। আচমকাই কোন্নগরের নিগৃহীত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁর গ্রামেরই একটি পরিবার মারধরের একটি ‘প্রত্যাহার’ করে নেওয়া অভিযোগকে সামনে আনলেন। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে নানা মাধ্যমে। এর পিছনে রাজনীতির কলকাঠিও দেখছেন কেউ কেউ। পরিবারটি তৃণমূল সমর্থক হিসেবে গ্রামে পরিচিত। যদিও পুরনো মামলার কোনও কাগজপত্র তাঁরা দেখাতে পারেননি।

সুব্রত চট্টোপাধ্যায় নামে কোন্নগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজের ওই শিক্ষক বর্তমানে শ্রীরামপুরের একটি আবাসনে থাকেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি হরিপালের পশ্চিম নারায়ণপুর গ্রামে। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা, ৭৯ বছরের বৃদ্ধ মনসারাম ঘোষ ও তাঁর পরিবারের লোকজন তৃণমূল সমর্থক। মনসারামই ১৯৯৭ সালে সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে মারধরের একটি অভিযোগকে সামনে এনেছেন। সেই সময়ে অবশ্য মনসারাম এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা কংগ্রেস করতেন। মনসারামবাবু তখন তারকেশ্বরের রামনগর নুটবিহারী পালচৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। সুব্রতবাবু সেই সময়ে দাপুটে সিপিএম নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি নারায়ণপুর সাধারণ পাঠাগারের সম্পাদকও ছিলেন।

মনসারামবাবুর অভিযোগ, ১৯৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি সকালে তাঁরা কয়েকজন ওই পাঠাগারে জাতীয় পতাকা তুলতে গেলে সুব্রতবাবুরা আপত্তি জানান। ২৬ জানুয়ারি স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা সেখানে পতাকা তোলেন। তার জেরে সুব্রতবাবুরা কয়েকশো লোক এনে ক্লাবের ছেলেদের মারধর করেন। সে দিন সকালে মেজো ছেলের বাইকে মনসারামবাবু নালিকুলে গিয়েছিলেন। ফেরার সময়ে বাহিরখণ্ড লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে সুব্রতবাবু-সহ দু’জন তাঁকে পতাকা উত্তোলনে ইন্ধন দেওয়ার ‘অপরাধে’ চড় মারেন ও জুতোপেটা করেন বলে তাঁর দাবি।

মনসারামবাবুরা জানান, এ নিয়ে সেই সময় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। পাল্টা মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছিল সিপিএমও। চন্দননগর আদালতে ১৫ বছর মামলা চলে। ২০১২ সালে মামলা প্রত্যাহার করে নেয় দু’পক্ষই। কিন্তু সেই পুরনো অভিযোগ এখন কেন সামনে আনলেন মনসারামবাবু?

বৃদ্ধের দাবি, ‘‘এখন সুব্রত মার খাওয়ায় খুব হইচই হচ্ছে। টিভিতে ওকে মার খেতে দেখে বারবার মনে হচ্ছিল, যেমন কর্ম, তেমন ফল। সে দিন আমিও তো শিক্ষক ছিলাম। ও গায়ে হাত তুলতে ভাবেনি। তবু আমি ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি। ওরও অভিযুক্তদের ভবিষ্যৎ ভেবে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত।’’

পুরনো অভিযোগ মানেননি সুব্রতবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘এটা চক্রান্ত। কোনও তৃণমূল নেতা কলকাঠি নাড়ছেন বলে মনে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের এই পরিণতি আমাকে অবাক করেছে।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘ওঁরা ভাগ্যিস স্বাধীনতার আগের কোনও ঘটনা টেনে আনেননি। গ্রামের ওই ঘটনায় আমি ছিলাম না। দু’পক্ষ মামলা করেছিল। আমার দাদা বাণীব্রতকে নির্মম ভাবে মারা হয়। তার প্রতিক্রিয়ায় ওঁদের দু’জন চড়-থাপ্পড় খায়। এর বেশি কিছু নয়। সেই মামলায় আমার নাম ছিল না। থাকলে ওঁরা দেখাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Konnagar Professor Assault TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE