Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

খেয়ালই নেই অক্সিজেন শেষ! ছটপট করতে করতে মৃত্যু হল বৃদ্ধের

চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিলই। সোমবার শেখ মনসুর আলি (৬০) নামে ওই বৃদ্ধের মৃত্যুতে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগও উঠল চিকিৎসক-নার্সদের বিরুদ্ধে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুশান্ত সরকার
পাণ্ডুয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৮ ০৪:০২
Share: Save:

শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত এক বৃদ্ধের জন্য অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল হাসপাতালে। কিন্তু সিলিন্ডারের অক্সিজেন যে কখন ফুরিয়ে গিয়েছে, তা দেখেননি কেউই। অক্সিজেনের অভাবে ছটছট করতে করতে মৃত্যু হল বৃদ্ধের।

চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিলই। সোমবার শেখ মনসুর আলি (৬০) নামে ওই বৃদ্ধের মৃত্যুতে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগও উঠল চিকিৎসক-নার্সদের বিরুদ্ধে। মৃতের ছেলে শেখ সাবিরের ক্ষোভ, ‘‘হাসপাতালে আনার পরে অক্সিজেন দেওয়ায় বাবা কিছুটা সুস্থ হয়েছিলেন। ঘণ্টাখানেক বাদে ছটফট করতে করতে আমার সামনেই বাবা মারা গেলেন। এমন গাফিলতি মানা যায়! কেউ একবার সিলিন্ডারটা পরীক্ষা করলেন না?’’

সিলিন্ডারটি কখন খালি হয়ে গিয়েছে, তা বুঝতে পারা যায়নি বলে মেনে নিয়েছেন বিএমওএইচ শ্রীকান্ত চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘ওই রোগীর মৃত্যুর কথা জানামাত্র আমি হাসপাতালে যাই। সকলের সঙ্গে কথা বলি। কেউই সিলিন্ডারটির দিকে নজর রাখেননি। আমি এই রিপোর্টই জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়েছি।’’ ঘটনার কথা জানার পরে সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সদর) বন্দনা সরকারকে সরেজমিনে ঘটননাস্থলে গিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ওখানকার বিএমওএইচ-কে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।’’

শেখ মনসুরের বাড়ি ওই ব্লকের সাঁচিতারা গ্রামে। এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসাও শুরু হয়। কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসকের কথামতো তাঁর জন্য অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেন হাসপাতাল কর্মীরা। মৃতের ছেলে সাবির জানান, বাবাকে কিছুটা সুস্থ দেখে তিনি ওষুধ কিনতে যান। ১১টা নাগাদ ফিরে এসে দেখেন, বাবা ছটফট করছেন। তিনি চিকিৎসককে ডাকতে যান। ফিরে এসে দেখেন, বাবার দেহে কোনও সাড় নেই। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তদন্তের দাবিতে থানায় এবং বিএমওএইচের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন সাবির।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সিলিন্ডারে কতটা অক্সিজেন রয়েছে, তা বোঝার জন্য মিটার থাকে। জলভর্তি পাত্রেও সিলিন্ডারে নল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া হয়। যাঁরা ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকেন, তাঁরাই এ সব করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সে সব কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। সাবিরের দাবি, সিলিন্ডারে মিটারও ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE