Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
AIMIM

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কটূক্তি, গ্রেফতার এমআইএম নেতা

পুলিশের দাবি, বুধবার সকালে ললিয়াবাড়ি সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে অশালীন ভাষায় একটি পোস্ট করেন। সে বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ধৃত মতিউর রহমান

ধৃত মতিউর রহমান

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:০৩
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কটূক্তি করার অভিযোগে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করল মালদহ জেলা পুলিশ। মতিউর রহমান নামে চাঁচলের ওই মাদ্রাসা শিক্ষক মালদহ জেলায় অল ইন্ডিয়া মজলিশে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর প্রথম সারির সংগঠক হিসাবে পরিচিত। বৃহস্পতিবার ভোররাতে ওই নেতার গ্রেফতারির পর (এআইএমআইএম)-র জাতীয় মুখপত্র এবং পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক আসিম ওয়াকার তৃণমূল সরকারের চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন। গ্রেফতারির বিরুদ্ধে রাজ্যের সর্বত্র প্রতিবাদ সংগঠিত করা হবে বলে জানান আসিম।

পুলিশের দাবি, বুধবার সকালে ললিয়াবাড়ি সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে অশালীন ভাষায় একটি পোস্ট করেন। সে বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫, ৫০৯ এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৭ নম্বর ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।

চাঁচলের এআইএমআইএম কর্মী সোহেল আনোয়ার এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘রাত আড়াইটের সময় পুলিশ মতিউরকে বাড়ি থেকে তুলে আনে থানায়।” তাঁর অভিযোগ, এ দিন সকাল পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের পরিষ্কার করে বলেনি ঠিক কী কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ফেসবুকে করা কটূক্তি প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘রঘুনাথগঞ্জে বুধবার পুলিশ এক এআইএমআইএম কর্মীকে ফোনে হুমকি দেয় এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সেই বিষয়টিই লিখতে চেয়েছিলেন মতিউর।”

আরও পড়ুন: উন্নাওয়ের ধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা অভিযুক্তদের

গত ৪৮ ঘণ্টায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ৪৭ সেকেন্ডের অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। ওই অডিয়োতে এক জন নিজেকে আসাদুল শেখ, এআইএমআইএম নেতা হিসাবে ফোনে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার অফিসারকে পরিচয় দিচ্ছেন। অডিয়োতে শোনা যাচ্ছে, আসাদুলকে ফোনের ওপ্রান্ত থেকে কোনও পুলিশ অফিসার জানাচ্ছেন, কোনও সভা-মিছিল করা যাবে না। অন্য দিকে আসাদুল প্রতিবাদ করলে তাঁকে গালিগালাজ করছেন ওই পুলিশ অফিসার। ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার। এআইএমআইএম নেতাদের দাবি, তাঁরা হায়দরাবাদে ধর্ষণ করে তরুণীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার প্রতিবাদে ৬ ডিসেম্বর একটি মোমবাতি মিছিল করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে সম্মতিও দিয়েছিল। তার পর হঠাৎ করে তা করতে বারণ করা হয়। তার প্রতিবাদ করায় পুলিশ ওই এআইএমআইএম কর্মীকে হুমকি দেয় এবং গালিগালাজ করে।

এ বিষয়ে আসিম ওয়াকার বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠনকে ভয় পাচ্ছেন মমতা। তাই রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা না করতে পেরে পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে, কার্যকর্তাদের গ্রেফতার করে সংগঠনের অগ্রগতি রুখতে চাইছে।” রাজ্য পুলিশের এক শীর্য কর্তা জানিয়েছেন, সোমবারই নবান্নে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এআইএমআইএম সম্পর্কে তাঁর কড়া অবস্থান জানিয়েছিলেন। এআইএমআইএম-র মতো কট্টরপন্থী সংগঠনকে কোনও ভাবে সভা মিছিল করতে দেওয়া হবে না তা পরিষ্কার করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, সেই নির্দেশ মেনেই বুধবার কলকাতায় হিন্দু জাগরণ মঞ্চকেও মিছিল করতে দেয়নি পুলিশ।

আরও পড়ুন: খুন-অপহরণ-ডাকাতি-মাওবাদী যোগ, কলকাতায় ধৃত বিহারের কুখ্যাত দুষ্কৃতী

তবে গোটা ঘটনাক্রম নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, রাজনৈতিক অঙ্ক থেকেই এআইএমআইএম-কে জায়গা ছাড়তে রাজি নন মমতা। কারণ আসাউদ্দিন ওয়াইসির সংগঠন এনআরসি ইস্যু এবং রাজ্যে বিজেপির উত্থানকে হাতিয়ার করে বেশ কিছু জায়গায় ভাল সংগঠন তৈরি করেছে সংখ্যালঘুদের মধ্যে। ওয়াইসি ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সে ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোটে ভাঙন ধরবে। আর সেটা তৃণমূল কংগ্রেস কখনই চাইবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE