Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের ‘উন্নয়ন যাত্রা’ নিয়ে সরব বিরোধীরা

গোটা বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, জেলা পরিষদের তৃণমূলের কিছু সদস্যও প্রশ্ন তুলেছেন।

‘উন্নয়ন যাত্রা’ নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, জেলা পরিষদের তৃণমূলের কিছু সদস্যও প্রশ্ন তুলেছেন।

‘উন্নয়ন যাত্রা’ নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, জেলা পরিষদের তৃণমূলের কিছু সদস্যও প্রশ্ন তুলেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৩০
Share: Save:

লোকসভা ভোটের আগে আদিবাসী এলাকায় জনসংযোগে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। সরকারি নানা প্রকল্পের প্রচারে পূর্ব বর্ধমানে যে ‘উন্নয়ন যাত্রা’ শুরু করছে জেলা পরিষদ, তা-ও আদিবাসী নানা পাড়ায় গিয়ে রাত কাটাবে। আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে থেকে অভাব-অভিযোগ শোনা হবে। ‘উন্নয়ন যাত্রা’র নামে আসলে শাসকদল ভোটের প্রচারই সারতে চাইছে, দাবি বিরোধীদের।

আজ, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ কালনা ২ ব্লকে স্বামী বিবেকানন্দের বাসভূমি দত্তদরিয়াটন থেকে ওই যাত্রা শুরু হবে। জেলার প্রতিটি ব্লক ছুঁয়ে প্রায় তিনশো কিলোমিটার পথ ঘুরে শনিবার বিকেলে তা শেষ হবে। ঠিক হয়েছে, যাত্রাপথে কাটোয়া ২ ব্লকের শ্রীবাটির নতুনগ্রাম, বর্ধমান ১ ব্লকের কুড়মুন, জামালপুরের জৌগ্রাম, আউশগ্রাম ১ ব্লকের দিগনগরে আদিবাসী পাড়ায় রাত কাটানো হবে। এ ছাড়া পূর্বস্থলী, মঙ্গলকোট, মেমারির সাতগেছিয়া, খণ্ডঘোষ এলাকায় ‘পিছিয়ে পড়া’ পরিবারে মধ্যাহ্নভোজের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু।

গোটা বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, জেলা পরিষদের তৃণমূলের কিছু সদস্যও প্রশ্ন তুলেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সদস্য বলেন, ‘‘পরিষদের পরিপূর্ণ বোর্ড গঠন হয়নি। কর্মাধ্যক্ষদের নাম ঘোষণা হয়নি। উপসমিতিতে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না জেলা পরিষদ।’’ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার দাবি করেন, ‘‘অর্থ উপসমিতিতে আলোচনা না করে জেলা পরিষদের টাকা খরচের অধিকার নেই। আসলে আদিবাসীদের নাম করে টাকা নয়ছয় করা হবে। আদিবাসী পাড়ায় রাত কাটিয়ে তাঁদের কোনও উন্নতি তো হবে না!’’

গত বছর বিজেপি নেতারাও ‘জনসম্পর্ক’ কর্মসূচিতে আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজ সেরেছিলেন। জেলা পরিষদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিজেপি-র জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর মন্তব্য, ‘‘সামনে লোকসভা ভোট। তাই হয়তো আদিবাসীদের জন্য প্রাণ কেঁদে উঠেছে শাসকদলের। পঞ্চায়েত ভোটে আদিবাসীদের উপরে হামলার কথা কি তাঁরা ভুলে গিয়েছেন!’’

যদিও সহ-সভাধিপতি দেবুবাবু এ সব সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত কয়েক বছর ধরেই আমরা নানা এলাকায় রাত কাটিয়ে গরিব মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনেছি। সেই মতো কাজ করার চেষ্টাও করেছি।’’ এই ‘উন্নয়ন যাত্রা’য় নির্মল বাংলা, একশো দিনের কাজ, বাংলা আবাস যোজনা, কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, খাদ্যসাথী-সহ নানা প্রকল্পের প্রচারে ৯টি গাড়ি থাকবে। এ ছাড়া ৫০ জন লোকশিল্পীর দল যাত্রাপথে সরকারের নানা কর্মসূচি তুলে ধরবে, সম্প্রীতি বজায়ের ডাক দেবে।

জেলা সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার বক্তব্য, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে বিভেদের বার্তা নিয়ে আগন্তুকেরা হাজির হবে। সম্প্রীতি অটুট রাখা আমাদের কর্তব্য— এই বার্তাই মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছি।’’ অর্থ উপসমিতি গঠন না করেই জেলা পরিষদের টাকা কী খরচ করা যায়? দেবুবাবুর জবাব, ‘‘জেলা পরিষদের কোনও টাকা খরচ হচ্ছে না। সরকারের বিভিন্ন দফতরে বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা ধার্য থাকে। এ ছাড়া তথ্য সংস্কৃতি দফতর শিল্পীদের খরচ দেয়। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতি খাওয়ার আয়োজন করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE