এ বার বিরোধী বামফ্রন্টের প্রত্যেক শরিকের জন্য আলাদা ঘর বরাদ্দ হল রাজ্য বিধানসভায়।
তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বিধানসভায় তাদের বিধায়কদের আলাদা ঘর দেওয়ার জন্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছিল বিরোধী ফ্রন্টের শরিকরা। সেই তালিকায় সদ্য যুক্ত হয়েছিলেন বিজেপির একমাত্র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যও। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার তাঁদের প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। ফ্রন্ট শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, ডিএসপির সঙ্গে বিজেপিকেও ঘর বরাদ্দ করেছেন স্পিকার।
বিধানসভায় বর্তমানে মন্ত্রী তো বটেই, শাসক দলের বিধায়কদের জন্য আলাদা ঘর রয়েছে। ঘর রয়েছে বিরোধী বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, এসইউসি এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়কদেরও। ফ্রন্ট শরিকদের এবং বিজেপির জন্য আলাদা ঘর দেওয়ার পরে এ দিন স্পিকারের বক্তব্য, “প্রত্যেক পরিষদীয় দলের মর্যাদা আছে। আমারা বিরোধীদের মর্যাদা দিই। সেই হিসেবেই বিভিন্ন পরিষদীয় দলের সদস্যদের জন্য আলাদা আলাদা ঘর দেওয়া হয়েছে।” এত দিন বিরোধী ফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমের বিধায়কদের সঙ্গেই শরিক দলের সদস্যদের একই ঘরে বসতে হত। ফ্রন্ট শরিক দলের সদস্যদের স্পিকারের কাছে আর্জি ছিল, তাঁদের দলীয় সদস্যদের মধ্যে মত বিনিময় বা কথাবার্তা বলার জন্য আলাদা ঘর দরকার। স্পিকার তাঁদের আর্জি মেনে শেষ পর্যন্ত ঘর বরাদ্দ করায় অধিকাংশ শরিক মোটামুটি সন্তুষ্ট। ফরওয়ার্ড ব্লকের বর্ষীয়ান বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “আমাদের ১১ জন বিধায়ক। ঘর পাওয়ায় বসতে সুবিধা হবে নিশ্চয়ই। তবে ওই ঘরে কী কী সুবিধা থাকছে, তা দেখলে বুঝতে পারব।” সিপিআই বিধায়ক আনন্দ মণ্ডলে প্রতিক্রিয়া, “দু’জন বিধায়ক এখন আমাদের। ঘর পেয়ে ভালই হয়েছে।”
তবে প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম মনে করেন, আরও আগে বিরোধী দলগুলির সদস্যদের জন্য ঘরের বন্দোবস্ত করা উচিত ছিল। তাঁর কথায়, “তৃণমূলের সরকার এসেছে প্রায় চার বছর। আলাদা ঘর দিতে এতদিন সময় লাগল কেন? আমি যখন স্পিকার ছিলাম তৃণমূলের একমাত্র বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও আলাদা ঘর দিয়েছিলাম।” কিন্তু আগে বাম শরিকদের ঘর কেন দেওয়া হয়নি তা নিয়ে হালিম বলেন, “ওঁরা তো তখন শাসক দলে ছিলেন।” তবে বাম আমলেই এসইউসি আলাদা ঘর পেয়েছিল। বর্তমান স্পিকার অবশ্য দাবি করেছেন, পরিষদীয় দলগুলিকে আলাদা ঘর দেওয়ার প্রক্রিয়া তাঁরা আগেই শুরু করেছিলেন। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়কদের ঘর দেওয়া হয়েছিল। এমনকী, সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার আবেদন পেয়ে বিধানসভার দোতলায় আলাদা বসার ব্যবস্থা তিনি করে দিয়েছেন বলে স্পিকার এ দিন জানান। রেজ্জাক মোল্লা এ জন্য তাঁকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন বলে স্পিকার দাবি করেছেন।
বাম আমলে তাঁদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা হলেও, ঘরে টিভি না থাকায় আক্ষেপ আছে এসইউসি-র একমাত্র বিধায়ক তরুণ নস্করের। তাঁর কথায়, “দোতলায় ঘর রয়েছে আমাদের। তবে সেখানে টিভি নেই। পেলে সুবিধা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy