Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফিরলেন গুরুঙ্গ

গত জুনে নতুন করে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরু করা পরে ছ’মাস ধরে তিনি ঘরছাড়া।বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দিয়ে প্রাক্তন মোর্চা সভাপতি জানালেন, তিনি কখনও পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি থেকে সরেননি।

বিমল গুরুঙ্গ। —ফাইল চিত্র।

বিমল গুরুঙ্গ। —ফাইল চিত্র।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৪
Share: Save:

দীর্ঘ ছ’মাস পরে আত্মপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গ। গোটা বিবৃতিতে কোথাও গোর্খাল্যান্ড শব্দটি ছিল না। কিন্তু দু’সপ্তাহের মধ্যেই একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে নিজের আগের অবস্থানে ফিরে এলেন তিনি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দিয়ে প্রাক্তন মোর্চা সভাপতি জানালেন, তিনি কখনও পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি থেকে সরেননি। সংবাদমাধ্যমের একাংশে যে বলা হচ্ছে, তিনি স্বশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, সে কথাও অস্বীকার করেন গুরুঙ্গ।

গত জুনে নতুন করে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরু করা পরে ছ’মাস ধরে তিনি ঘরছাড়া। এর মধ্যে রাজ্যের ডাকা সর্বদলে যোগ দেন মোর্চা নেতা এবং গুরুঙ্গের একসময়ের ঘনিষ্ঠ বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপারা। তার পর তাঁদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন। এখন বিনয় জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের চেয়ারম্যান। অনীত তাঁর সহযোগী। পাহাড়ও শান্ত।

এই পরিস্থিতিতে দু’সপ্তাহ আগে দিল্লিতে প্রকাশ্যে এসে গুরুঙ্গ বার্তা দেন, তিনি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। সে দিন গোর্খাল্যান্ডের প্রসঙ্গ কোথাও ছিল না। তখনই প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি ঘাত-প্রতিঘাতে বিধ্বস্ত গুরুঙ্গ এ ভাবে মূল স্রোতে ফিরতে চাইছেন?

এর দু’সপ্তাহ পরে হঠাৎ কেন পুরনো দাবিতে ফিরলেন গুরুঙ্গ, এ দিন উঠেছে সেই প্রশ্নও। পাহাড়ের অনেকেই বলছেন, তাঁর তালুক দখল করে নিয়েছেন বিনয়-অনীতরা। খুব তাড়াতাড়ি গুরুঙ্গ পাহাড়ে ফিরতে পারবেন— এমন সম্ভাবনাও নেই। তার উপরে পাহাড়ের সংবাদমাধ্যমের একাংশে দাবি করা হয়েছে, তিনি ২৪৪ ধারা অনুযায়ী স্বশাসনের কথা ভাবছেন। এই প্রচারে তাঁর ভাবমূর্তির আরও ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় জমি বাঁচাতে কিছুটা মরিয়া হয়েই এ দিন বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।

এ দিন গুরুঙ্গ জানিয়েছেন, স্বশাসনের মতো কোনও অস্থায়ী সমাধানের কথা কোনও দিনই ভাবেননি। সুবাস ঘিসিঙ্গের ডিজিএইচসি এবং তাঁর জিটিএ-র উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দু’টি স্বশাসিত পর্ষদের কোনওটিই পাহাড়ের আশা পূরণ করতে পারেনি। একই সঙ্গে জানান, তিনি কখনওই গোর্খাল্যান্ডের দাবি ছাড়েননি। গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড হলে তবেই আমাদের শতবর্ষ পুরনো দাবি পূরণ হবে।’’ একই সঙ্গে বিনয়-অনীতদেরও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।

এই নতুন বার্তা শুনে বিনয় বলেন, ‘‘পাহাড়বাসী চেয়েছেন বলেই পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে। তাঁরা আর কারও হাতের পুতুল হয়ে থাকতে রাজি নন।’’ বিনয় শিবিরের দাবি, পায়ের তলার মাটি ক্ষয়েছে বলেই প্রাসঙ্গিক হতে একেক সময়ে একেক গল্প দিয়ে বিবৃতি বিলি করা হচ্ছে। তবে এতে লাভ হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE