সাতে পা: নবান্নের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: প্রদীপ আদক।
কেন্দ্রের কাছে ধার শোধ করেও রাজ্য এগিয়ে চলেছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি— শিল্প, কৃষি, পরিষেবা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যের গড় উন্নয়নের হার দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
শনিবার নবান্নে তাঁর সরকারের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরতে একটি বই ও সিডি প্রকাশ করেন মমতা। সেখান থেকেই পরিসংখ্যান তুলে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নের নিরিখে জাতীয় গড়কে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে এই রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ এখন প্রথম সারির রাজ্যগুলির একটি।’’
এর পরেই নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘আড়ম্বর করে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, ঝুনঝুনি বাজিয়ে আমাদের উন্নয়নের কথা বলতে হয় না!’’ মোদী সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশ জুড়ে নানা কর্মসূচি পালন করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মমতার কথায়, ‘‘আমরাও ইচ্ছে করলে সরকারের বর্ষপূর্তি অন্য ভাবে পালন করতে পারতাম। কিন্তু এ দিনের অনুষ্ঠানের জন্য ইচ্ছে করেই প্রশাসনের সদর দফতর নবান্নকে বেছে নিয়েছি।’’ এ দিন সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ঋণের বোঝা মাথায় থাকলেও উন্নয়নের সঙ্গে তিনি আপস করেননি।
মমতার এই সাফল্যের দাবিকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘গত ছ’বছরে এ রাজ্য ক্রমেই হাস্যাষ্পদ হয়ে উঠেছে। কিছু সৃষ্টিই তো হয়নি, বরং তৈরি কারখানাকে ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করার নজির এ রাজ্য দেখিয়েছে!’’ বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহর বক্তব্য, ‘‘উনি তো এক এক দিন এক একটা রেকর্ডের খতিয়ান দেন! যে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই, সেখানে উন্নয়ন কী হবে?’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘শিশুপাচারে, নারী ধর্ষণে এ রাজ্য এক নম্বরে। এটাই কি উন্নয়নের নজির?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘শিল্পই যেখানে আসে না, সেখানে উন্নয়ন হবে কী ভাবে?’’
এ দিন সাফল্যের দাবি করতে গিয়ে মমতা জানান, এই সময়ে পরিকল্পনা খাতে ব্যয়-বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে তিন গুণ। রাজস্ব আদায় দ্বিগুণ, মূলধনী খাতে ব্যয় বৃদ্ধি সাত গুণ বেড়েছে। অন্য দিকে, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনও দ্বিগুণ হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, ‘‘কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী-সহ কোনও প্রকল্প বন্ধ হয়নি। এই সময়ে ৮১ লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে। সাড়ে ৮ কোটি মানুষ খাদ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। সব মিলিয়ে ৯০% মানুষ সরকারের উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করছেন। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁর আবেদন, ‘‘আমার প্রচার করতে হবে না। আমার নামের দরকার নেই। রাজ্যের উন্নয়নের চিত্রটা তুলে ধরুন।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি আজ খুব খুশি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy