Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আড়াই ঘণ্টায় ১৩৮, ‘জনমতের চাপ’ স্পষ্ট 

লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার তৈরির আগে ‘জনমতের চাপ’ হাতে-কলমে টের পেলেন পি চিদম্বরম!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

আগে থেকে বিষয় বেঁধে দেওয়া ছিল। কিন্তু বিষয়ের বেড়া ভেঙে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে রাশি রাশি ক্ষোভ উগরে দিয়ে স্রোতের মতো প্রস্তাব ভেসে এল ‘জনমত’ নেওয়ার আসরে! ঘণ্টা আড়াইয়ের আসরে মোট ১৩৮টা প্রস্তাব। লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার তৈরির আগে ‘জনমতের চাপ’ হাতে-কলমে টের পেলেন পি চিদম্বরম!

রাহুল গাঁধীর নির্দেশ মতো ইস্তাহারের খসড়া তৈরির আগে বিষয় ধরে ধরে সমাজের নানা ক্ষেত্রের মানুষের মতামত নিতে শুরু করেছে কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় ইস্তাহার কমিটির চেয়ারম্যান চিদম্বরম কলম-নোটবই নিয়ে শুক্রবার আড়াই ঘণ্টা বসেছিলেন মৌলালি যুবকেন্দ্রে। কর্মসূচি ছিল অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) প্রতিনিধিদের কথা শোনা। কিন্তু সেই ক্ষেত্রের পাশাপাশিই শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ আমজনতার জীবনের নানা টুকরোই উঠে এল মতামত নেওয়ার আসরে। অধিকাংশ প্রস্তাব এল জিএসটি-র বিরোধিতা করে। কেউ বললেন, সকলকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। তাই ব্লক স্তরে দক্ষতা নির্মাণ কেন্দ্র গড়ে তোলায় জোর দেওয়া হোক। কেউ প্রস্তাব দিলেন, পেনশনকে পুরোপুরি করমুক্ত করার আশ্বাস দিক কংগ্রেস। দাবি উঠল, সাংসদ ও বিধায়কদের বেতনের ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার! আবার শেষ বেলায় কারও প্রস্তাব, খাদ্য নিরাপত্তা আইনে দু’টাকা কিলো চাল পাওয়া যায়। এখন আর দু’টাকার কী মূল্য আছে? তার চেয়ে নিখরচায় খাদ্যশস্য দেওয়ার ঘোষণা করে হইচই ফেলে দিক কংগ্রেস!

কংগ্রেসের এ দিনের আসর থেকে স্পষ্ট, মোদী সরকারের নোট বাতিল এবং জিএসটি-র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-অভিযোগ আছে বিস্তর। মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা কেউ কেউ বলেছেন, ওস্তাগরদের জীবিকা মার খেয়েছে। জঙ্গিপুরের বাসিন্দা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলেছেন, তাঁদের এলাকায় ঘরে ঘরে যে রেশম শাড়ি ও খাদির পোশাক তৈরি হয়, জিএসটি চাপানোর ফলে তার বিক্রি কমে গিয়েছে। বাদুড়িয়ার এক কাগজ কলের মালিক দাবি করেছেন, ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেনদেন যে ব্যবসার, তাদের জন্য কিছু ছাড়ের বন্দোবস্ত হোক। যাদবপুরের এক অধ্যাপক যখন বলেছেন, হস্টেল ফি-তেও এখন জিএসটি নেওয়া হচ্ছে, আঁতকে উঠেছেন চিদম্বরম! জানতে চেয়েছেন, এ আবার হয় নাকি? বাকিদের অভিজ্ঞতাও কি তা-ই? হল থেকে ইতিবাচক সাড়া এসেছে, কেউ কেউ জানিয়েছেন, বেসরকারি স্কুল পর্যন্ত বাড়তি টাকা নেওয়ার জন্য জিএসটি প্রয়োগ করছে!

সকলের মত শুনে চিদম্বরমের সহাস্য মন্তব্য, ‘‘যা প্রস্তাব পেলাম, তাতেই একটা আস্ত ইস্তাহার হয়ে যায়। দেশের আর কোথাও আমার যাওয়ারই দরকার নেই!’’ রসিকতা করলেও ইস্তাহারের জন্য জনমত নিতেই তিনি কলকাতা থেকে রাতে গিয়েছেন গুয়াহাটি। গুচ্ছ গুচ্ছ প্রস্তাব সম্পর্কে অবশ্য নিজে কোনও মত দেননি কমিটির চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, ‘‘এখন আমার কাজ শুধু শোনা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Economy Banking Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE