Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পূর্ব রেলের ট্রেনে পিংলার পটের রঙিন ছোঁয়া

ক্ষুদিরাম বসু সেন্ট্রাল কলেজের ছাত্রী হঠাৎ ট্রেনের কামরায় পটচিত্র আঁকতে গেলেন কেন?

উজ্জ্বল: এই ছবি এঁকেই প্রশংসা পাচ্ছেন অনিন্দিতা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

উজ্জ্বল: এই ছবি এঁকেই প্রশংসা পাচ্ছেন অনিন্দিতা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

দীপক দাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:১৮
Share: Save:

ছবিটা এঁকেছিলেন মন দিয়ে। প্রশংসাও এসেছিল মোবাইল মারফত। কিন্তু তখনও জানতে পারেননি তিনি যে ছবি এঁকেছেন ট্রেনের কামরায়, তা অবিভক্ত মেদিনীপুরের এক ঐতিহ্যবাহী শিল্প। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার পটচিত্র এঁকেছিলেন শিল্পী অনিন্দিতা দেব।

অনিন্দিতার বাড়ি হাওড়া জেলার বালিতে। পেশায় মুরাল শিল্পী। ‘ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং’য়ের কোর্স করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পরে। ক্ষুদিরাম বসু সেন্ট্রাল কলেজের ছাত্রী হঠাৎ ট্রেনের কামরায় পটচিত্র আঁকতে গেলেন কেন? ফোনে শিল্পী বললেন, ‘‘ট্রেনের কামরায় এটাই আমার প্রথম কাজ নয়। এর আগেও ছবি এঁকেছি। কাজ করেছিলাম শিয়ালদহ লাইনের নারকেলডাঙা কারশেডে। একটি লোকাল ট্রেনের কামরায় ছবি আঁকি।’’

ট্রেনের কামরায় অনিন্দিতার প্রথম আঁকা ছবি ছিল ল্যান্ডস্কেপ। কামরার এক দেওয়ালে ছিল গ্রাম বাংলার প্রকৃতি। আর অন্য দেওয়ালে ছিল পাহাড়ে সূর্যাস্ত। যাত্রীরা প্রশংসা করেছিলেন? শিল্পী জানালেন, যাত্রীদের ভাল লাগা বা মন্দ লাগার বিষয়ে জানার কোনও সুযোগ ছিল না। কারণ ছবিতে ফোন নম্বর দেওয়ার অনুমতি পাননি তিনি। তবে রেলের সিনিয়র আধিকারিকেরা খুশি হয়েছিলেন ছবি দেখে। তাঁরা অনিন্দিতাকে শংসাপত্রও দিয়েছিলেন।

পরে হাওড়ার ডিআরএম অফিস থেকে পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনের কামরায় ছবি আঁকার সুযোগ আসে। এ বার আঁকলেন পটচিত্র। চেষ্টা করেছিলেন ছবিতে মাটির ঘরের ছাপ ফুটিয়ে তোলার। কিন্তু জুন-জুলাই, টানা দু’মাস ধরে কাজ চলে। সেই সময়ে প্রবল গরম। ট্রেনের কামরায় দীর্ঘক্ষণ কাজ করা সম্ভব ছিল না। ফলে ছবিতে মাটির ঘরের খড়ের চালের অনুষঙ্গটা ফুটিয়ে তুলতে পারেননি অনিন্দিতা। কিন্তু কী আঁকবেন তা আগে থেকে ঠিক করেননি? অনিন্দিতা বললেন, ‘‘ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করছিলাম। তার পরে ধমসা, মাদল নিয়ে গ্রামীণ পটভূমিতে আঁকা এই ছবিটাই পছন্দ হয়। আমি জানতাম, এটা কালীঘাটের পট। তার খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারি, এটা পিংলার পট।’’

আঁকা ছবির উৎস জানতে পারেননি প্রথমে। তবে আঁকার প্রশংসা পেয়েছেন। এ বার ছবিতে ফোন নম্বর দেওয়ার অনুমতি ছিল। সেই নম্বর দেখে বহু যাত্রী ফোন করে উৎসাহ দিয়েছেন। এক যাত্রী ফেসবুকেও পোস্ট করেছিলেন।

আবার যাত্রীদের ছবিতে খুশি করার সুযোগ আসবে। আশায় অনিন্দিতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Painting Pottery Art Local Train
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE