Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চায়েতের আগে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বই শাসকের কাঁটা

কালনার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুর শেখ ও তৃণমূল কর্মী বাপন শেখ শনিবার বিকেলে গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিন সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় বাপনের। রাতে মারা যান সুকুর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৭
Share: Save:

তৃণমূল নেতৃত্ব আগেই জানতেন, পঞ্চায়েত ভোটে ভোগাতে পারে দলেরই গোষ্ঠী-কলহ। ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই সত্য প্রমাণিত হচ্ছে তাঁদের আশঙ্কা। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের কাঁটায় ক্রমাগত রক্তাক্ত হচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ, জখম বা মৃত্যুর ঘটনার তালিকায় এ বার যুক্ত হল কালনা।

কালনার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুর শেখ ও তৃণমূল কর্মী বাপন শেখ শনিবার বিকেলে গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিন সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় বাপনের। রাতে মারা যান সুকুর। রবিবার বাপনের বাবা মেহের আলি শেখ কালনা থানায় তৃণমূলেরই ২৭ জনের নামে অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সাদেক শেখ, জেলা পরিষদ সদস্য শান্তি চাল।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সুকুর ও সাদেকের গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ রয়েছে। সুকুরের পরিজনদের দাবি, তৃণমূল নেতৃত্ব গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব রুখতে আগে থেকে কড়া পদক্ষেপ করলে এই ঘটনা ঘটত না। সাম্প্রতিক কালে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সকলেই দলীয় বৈঠকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নিজেদের মধ্যে লড়াই বন্ধ করতে হবে। পঞ্চায়েতে নিজেদের কাজের ভিত্তিতেই ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ে নামতে হবে। কিন্তু তার পরেও রক্তারক্তি যে ভাবে চলছে, তাতে উদ্বিগ্ন তৃণমূল নেতৃত্ব।

যেমন— কালনার আগে নদিয়ার শান্তিপুর, চাপড়া এবং রানাঘাট তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরে হিংসার সাক্ষী হয়েছে। শান্তিপুরে গত দু’মাসে সাত-আটটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হুগলির আরামবাগেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূলের এক যুব নেতা। আবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে ‘জনরোষে’ নিহত হয়েছেন তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধান।

তৃণমূল নেতৃত্বের হুঁশিয়ারিতে কি দলীয় কর্মীরা কান দিচ্ছেন না? দলের মহাসচিব পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘বেশির ভাগ জায়গাতেই বিভিন্ন স্থানীয় বিবাদের ঘটনা ঘটছে। তাতে রাজনীতির রং লেগে যাচ্ছে। দলের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ আছে, পঞ্চায়েতের টিকিট, পদ পাওয়া বা কোনও বিষয়েই গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। দলের নির্দেশ সকলকে মান্য করতে হবে।’’ আর বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিরোধীরা এর আগে আক্রান্ত হয়েইছে। এখন তৃণমূলের হাত থেকে তৃণমূলেরও রেহাই নেই। যে লঙ্কাকাণ্ড বাংলায় শুরু হয়েছে, এই আগুন থেকে কেউ বাঁচবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE