Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বাবা-মা ব্যস্ত সমুদ্রে, সৈকতে গাড়িতে ‘বন্দি’ শিশু

বুধবার নিউ দিঘায় এভাবেই বছর পাঁচেকের ওই শিশুকে রক্ষা করল এবং স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রের খবর, সাদাব শেখ নামে ওই শিশু তার বাবা-মা এবং পরিজনের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে এসেছিল।

রক্ষা: পুলিশ কর্মীর কোলে উদ্ধার হওয়া শিশু। নিজস্ব চিত্র

রক্ষা: পুলিশ কর্মীর কোলে উদ্ধার হওয়া শিশু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০১:৪৫
Share: Save:

সৈকতের পাশে দাঁড় করানো গাড়ির ভিতরে অঝোরে কাঁদছে এক শিশু। সজোরে ঘুষি মারছে বন্ধ কাচে। আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিছু বলার।

শিশুটির ভয়ার্ত মুখ আর তার আচরণ দেখে থমকে দাঁড়িয়েছিলেন পথচলতি মানুষেরা। কিছু একটা গন্ডোগোল হয়েছে, বুঝতে পেরে তাঁরা দ্রুত খবর দেন থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেরি করেন পুলিশ। পুলিশ গিয়ে শিশুটির পরিস্থিতি দেখেই বুঝতে পারে যে, বন্ধ গাড়ির মধ্যে শ্বাস কষ্ট হচ্ছে তার। দ্রুত গাড়ির কাচ ভেঙে শিশুটিকে বার করে আনে পুলিশ।

বুধবার নিউ দিঘায় এভাবেই বছর পাঁচেকের ওই শিশুকে রক্ষা করল এবং স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রের খবর, সাদাব শেখ নামে ওই শিশু তার বাবা-মা এবং পরিজনের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে এসেছিল। সকলেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের কুমড়াখালির বাসিন্দা। সাদাবের বাবা সেলিম শেখ এবং মা নাজমা বিবি এ দিন সমুদ্র-স্নানের জন্য নিউ দিঘায় আসেন। কিন্তু ছোট্ট সাদাবকে সমুদ্রে নামানোর ঝুঁকি নিতে চাননি তাঁরা। সেই জন্য গাড়ির চালকের কাছে ছেলেকে রেখে সমুদ্রে স্নান করছে যান সেলিম এবং নাজমা।

কুমড়াখালির ওই দম্পতির ফিরতে দেরি দেওয়ায় গাড়ির চালক তাঁদের খুঁজতে যান। অভিযোগ, সে সময় তিনি সাদাবকে গাড়ির ভিতরে রেখে দরজা বন্ধ করে দেন। তুলে দেন গাড়ির কাচও। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, বেশ কিছুক্ষণ পরেও কেউ গাড়িতে ফিরে আসেনি। এ দিকে গাড়ির মধ্যে বন্ধ অবস্থায় শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকে সাদাব। তার পরেই পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সাদাবকে আনা হয় দিঘা থানায়।

এ দিকে, এত কাণ্ডের আরও বেশ কিছুক্ষণ পরে স্নান সেরে গাড়ির কাছে ফেরেন সেলিমরা। গাড়ির কাচ ভাঙা এবং সন্তানকে না দেখে তাঁরা আশেপাশে খোঁজ শুরু করেন। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ওই দম্পতি এবং গাড়ির চালক দিঘা থানায় আসেন। তিনজনকেই পুলিশ আটক করে। সাদাবের বাবা সেলিম পুলিশকে জানিয়েছে, গাড়ির চালকের কাছেই ছেলেকে রেখে, তিনি নিশ্চিন্ত হয়ে স্নানে গিয়েছিলাম। তাঁর দাবি, এমন কাণ্ড ঘটবে, তা তাঁরা কল্পনাও করিনি। আর গাড়ির চালকের বক্তব্য, ‘‘সাদাবের বাবা-মাকেই খুঁজতে গিয়েছিলাম। কারণ, ও বারবার বাবা-মাকে খুঁজছিল। সাদাব যাতে কোথাও চলে যেতে না পারে, সে জন্য গাড়ি লক করে দিয়েছিলাম।’’

পুলিশ পরে সাদাবকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু অভিভাবকের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের তাঁদের কাছ থেকে মুচলেখা লিখিয়ে নেয়।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Digha Police Sea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE