শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ টানাপড়েন শেষ। অবশেষে পাশ-ফেল প্রথা ফিরে আসছে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে। এবং সেটা আগামী শিক্ষাবর্ষেই। খুব তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা বেরোবে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘জানুয়ারিতে নতুন শিক্ষাবর্ষেই পঞ্চম ও অষ্টমে আবার পাশ-ফেল চালু হয়ে যাচ্ছে। যে-সব পড়ুয়া অকৃতকার্য হবে, তাদের জন্য থাকবে ‘রেমিডিয়াল টেস্ট’।’’ শিক্ষার অধিকার আইনে পাশ-ফেল সংক্রান্ত সংশোধনী বিলটি সংসদের উভয় কক্ষেই পাশ হয়। পার্থবাবু তখন জানিয়েছিলেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।
তৃণমূল সরকার শুরু থেকেই পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনার পক্ষপাতী। শিক্ষামন্ত্রী এই বিষয়ে শিক্ষাবিদ, শিক্ষক সংগঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামতও নেন। কোন ক্লাস থেকে ফের পাশ-ফেল চালু করা হবে, বিভিন্ন সময়ে তা নিয়ে মতভেদ দেখা গিয়েছে। তবে কেন্দ্রের সংশোধনীতে বলা হয়েছে, পাশ-ফেল ফেরাতে হবে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে। বাংলার কিছু রাজনৈতিক দল, শিক্ষক সংগঠন এর বিরুদ্ধে মত দিলেও রাজ্য সরকার এর বাইরে যাবে না বলেই খবর ছিল।
পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে কোনও পড়ুয়া ফেল করলে তাকে দু’মাস বিশেষ ক্লাস করিয়ে আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই পরীক্ষাতেও যদি সে পাশ করতে না-পারে, তা হলে তাকে আগের ক্লাসেই থেকে যেতে হবে। এই ‘রেমিডিয়াল টেস্ট’ কী ভাবে নেওয়া হবে, তার নির্দেশিকা তৈরির কাজ চলছে। যে-সব পড়ুয়া এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নতুন ক্লাসে যাবে, তাদের পঠনপাঠন শুরু করতে কিছুটা দেরি হবে। ভাবনাচিন্তা চলছে সেই বিষয়েও। সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর বক্তব্য, অকৃতকার্য ছাত্র বা ছাত্রীকে রেমিডিয়াল টেস্টের আগে স্কুলে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তার স্কুলে আসা বন্ধ হয়ে গেলে স্কুলছুট হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
সারা বাংলা শিক্ষা বাঁচাও কমিটি প্রথম শ্রেণি থেকেই পাশ-ফেল চালু করার দাবি জানিয়ে আসছে। কমিটির নেতা কার্তিক সাহা বলেন, ‘‘পঞ্চম-অষ্টমে পাশ-ফেল ফেরালে প্রাথমিকটা প্রায় অবহেলিতই থাকছে।’’ এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা চাই, পাশ-ফেল চালু হোক প্রথম শ্রেণি থেকেই। এ নিয়ে আমাদের আন্দোলন চলবে।’’ সৌগতবাবু জানান, তাঁরা চেয়েছিলেন অন্তত তৃতীয় শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল ফিরুক। বাম শিক্ষক সমিতি এবিটিএ বরাবরই পাশ-ফেল প্রথা ফেরানোর বিরোধী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, ‘‘আমরা আবারও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি। ধারাবাহিক নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নই সব পড়ুয়ার পক্ষে আদর্শ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy