Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ট্রেন দুর্ঘটনায় রাতভর ভোগান্তি

দুর্ঘটনার জেরে ১০ জোড়া লোকাল বাতিলের পরেও যে সব ট্রেন চালানো হয়, তা চলেছে প্রতি স্টেশনে বা দুই স্টেশনের মধ্যবর্তী জায়গায় ১০-১৫ মিনিট করে থামতে থামতে।

শনিবার গভীর রাতেও এমনই ভিড় ছিল ট্রেনে। নিজস্ব চিত্র

শনিবার গভীর রাতেও এমনই ভিড় ছিল ট্রেনে। নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ পাল 
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

প্রতিদিন ট্রেন ‘লেট’ নিয়ে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেন, কর্ড এবং তারকেশ্বর শাখার যাত্রীদের ক্ষোভ রয়েছেই। শনিবার শ্রীরামপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে গভীর রাত পর্যন্ত দুর্ভোগে যাত্রীদের সেই ক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়ল।

দুর্ঘটনার জেরে ১০ জোড়া লোকাল বাতিলের পরেও যে সব ট্রেন চালানো হয়, তা চলেছে প্রতি স্টেশনে বা দুই স্টেশনের মধ্যবর্তী জায়গায় ১০-১৫ মিনিট করে থামতে থামতে। ফলে, ২০ মিনিটের পথ কেউ পৌঁছলেন দু’ঘণ্টায়, এক ঘণ্টার পথ কেউ পৌঁছলেন তিন-চার ঘণ্টায়। বাদ সেধেছিল বৃষ্টিও। বহু যাত্রীকে বৃষ্টিভেজা জামাকাপড় পরেই ট্রেনের ভিড়ে ঠাসা কামরায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হয়। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বহু মহিলা যাত্রী। রাত ১২টার পরে নির্দিষ্ট স্টেশনে পৌঁছনোর পরেও দুর্ভোগ পিছু ছাড়েনি অনেকের। কারণ, গ্যারাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা নিজেদের সাইকেল, মোটরবাইক পাননি। অত রাতে ছিল না অটো-টোটো বা রিকশাও। ফলে, ফাঁকা রাস্তায় হেঁটে ফিরতে হয় তাঁদের।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আপ শেওড়াফুলি লোকাল শ্রীরামপুর স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢোকার জন্য রিভার্স লাইন ধরে আসার সময়ে ওই লাইনেই থাকা রেলের একটি ‘ইনস্পেকশন কার’ বা ‘টাওয়ার ভ্যানে’ ধাক্কা মারে। ভ্যানের আট জন জখম হন। ভ্যানটি ১ ও ২ নম্বর লাইনের মধ্যে উল্টে যায়। কিন্তু দুর্ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দিতে রেলকর্তারা সে ভাবে পারেননি বলে মনে করছেন বহু যাত্রী। সাঁইথিয়ায় মামাবাড়ি থেকে হিন্দমোটরে বাড়ি ফেরার জন্য শ্রেয়া চক্রবর্তী নামে এক তরুণী শনিবার দুপুরে মা তারা এক্সপ্রেস ধরেন। ব্যান্ডেলে নেমে লোকাল ধরে সন্ধ্যা ছ’টার কিছু পরে তাঁর হিন্দমোটরে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু তিনি যখন হিন্দমোটরে নামেন, তখন রাত একটা। তিনি জানান, সওয়া ৫টা থেকে এক্সপ্রেসটি তালাণ্ডু স্টেশনে দু’ঘণ্টার উপর দাঁড়িয়ে ছিল। ব্যান্ডেলে ঢুকতে রাত পৌনে ১০টা বেজে যায়।

যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি মানছেন রেলকর্তারা। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘দুর্ঘটনার জন্য ডাউন লাইন আটকে গিয়েছিল। ফলে, ওই লাইনে ট্রেন চালানো বন্ধ রাখতে হয়। রিলিফ ট্রেন এসে একটি লাইনে দাঁড়ায়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ‘ইনস্পেকশন কার’টিকে সরাতেও সময় লাগে। সেই কারণেই সার্বিক ভাবে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়।’’

শনিবার রাত সাড়ে ১২টাতেও ডাউন লাইনে একের পর এক লোকাল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। হাওড়া থেকে ছাড়া ট্রেনগুলিতে তিলধারণের জায়গা ছিল না। নড়াচড়ার জায়গাটুকুও না-পেয়ে যাত্রীদের কার্যত নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। চুঁচুড়ার এক মহিলা যাত্রী বলেন, ‘‘অত রাতে ভয়ে লেডিস-কামরার দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suffering Train Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE