Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2020

বড় পুজোয় ভিড় নিয়ে আর্জি হাইকোর্টে

পুলিশ ফের নড়ে বসেছে। পুজোকর্তাদেরও জবাবদিহি করতে হচ্ছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

ঋজু বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:০৫
Share: Save:

পুজো শেষ। তবু হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে মণ্ডপে দর্শনার্থীর ভিড় সামলাতে পুলিশি তৎপরতা বা পুজোর কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ফের হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়াল। কলকাতা ও সল্টলেকের কয়েকটি বাঘা-বাঘা পুজোর মণ্ডপের ছবি-সহ প্রমাণ দাখিল করে হাইকোর্টে গত শনিবার একটি আর্জি জানিয়েছেন জনৈক প্রবীণ নাগরিক। যার জেরে পুলিশ ফের নড়ে বসেছে। পুজোকর্তাদেরও জবাবদিহি করতে হচ্ছে।

অসীম সেনগুপ্ত নামে এক ব্যক্তি নিজেকে বয়স্ক নাগরিক বলে পরিচয় দিয়ে ইমেলে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানান। কলকাতার পুলিশ কমিশনারকেও ইমেলের কপি দেওয়া হয়েছে। ‘রেটারি রোটারাক্ট শারদ স্বীকৃতি’ বলে রোটারি ইন্টারন্যাশনালের যুব সংগঠনের শারদ-সম্মান বিতরণের সময়েই কয়েকটি পুজোমণ্ডপে ভিড়ের ছবি তিনি সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পেজ থেকে সংগ্রহ করে ইমেলের সঙ্গে পাঠিয়েছেন। অসীমবাবুর দাবি, ওই কয়েকটি পুজোয় সুস্পষ্ট ভাবে হাইকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে।

অভিযুক্ত পুজোগুলির মধ্যে শহরের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির পুজো। সুরুচি সঙ্ঘ, নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ, টালা প্রত্যয়, কাশী বোস লেন, সন্তোষপুর লেক পল্লি, বেহালা নূতন দল, বড়িশা ক্লাব, নলিন সরকার স্ট্রিট, বৃন্দাবন মাতৃমন্দির, চোরবাগান, হরিদেবপুর ৪১ পল্লি এবং সল্টলেকের এফডি ব্লকের পুজোর নাম রয়েছে। পুজোর আগে মণ্ডপে ভিড় নিয়ে জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ তো আদালত অবমাননার শামিল। আমরা অবশ্যই এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

সুরুচি সঙ্ঘ রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পুজো বলে পরিচিত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা হাইকোর্টের সব নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনেছি। ভিড় নিয়ে অভিযোগের চিঠি হাতে পেলে বলতে পারব।’’ আর এক মন্ত্রী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো বলে চিহ্নিত নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ। ওই পুজোর কর্তা রিন্টু দাসও হাইকোর্টে অভিযোগের চিঠি হাতে পেলেই বিষয়টি নিয়ে বলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। রবিবারই অবশ্য সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার পুলিশ অভিযুক্ত পুজোগুলির বেশির ভাগের সঙ্গে কথা বলেছে। কোথাও কিছু অসুবিধা হয়েছে কি না জেনে অভিযোগের সারবত্তা বুঝে পুলিশের তরফেও হাইকোর্টে কৈফিয়তের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

হাইকোর্টের নির্দেশে ছোট মণ্ডপ ঘিরে ‘নো এন্ট্রি জোন’-এ সর্বাধিক ১৫ জন ও বড় মণ্ডপের ক্ষেত্রে ৪৫ জন থাকতে পারবেন বলা হয়েছিল। ঢাকি, কর্মকর্তা মিলিয়ে সংখ্যাটি এর বেশি বাড়ার কথা ছিল না। কয়েকটি পুজোর দাবি, কিছু ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার বিচারকেরা এলে কারা আসছেন থানাকে আগাম জানানো হয়। সন্তোষপুর লেক পল্লির সোমনাথ দাস বলেন, ‘‘কখনওই মণ্ডপের ঘেরাটোপের মধ্যে হাইকোর্ট নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি কেউ ছিলেন না।’’

পুলিশের বক্তব্য উত্তর কলকাতার ছোট গলির একটি পুজোয় ঘেরাটোপের মধ্যে কয়েকটি বাড়িও পড়ে যায়। সেই বাড়ির বাসিন্দাদেরও আসা-যাওয়া করতে হয়েছে। অষ্টমী, নবমীতে কয়েকটি এলাকায় ভিড় বাড়লেও মণ্ডপের হাইকোর্ট নির্দিষ্ট ঘেরাটোপ কার্যত অগম্য ছিল। কাশী বোস লেনের সোমেন দত্ত বা টালা প্রত্যয়ের অভিজিৎ বসাকও জানান, অভিযোগের চিঠি পেলেই সবটা বোঝা যাবে। লক্ষ্মীপুজোর পরে হাইকোর্ট খুললেই বিষয়টি এজলাসে উঠতে পারে। তবে পুলিশের এক কর্তার মত, মণ্ডপে ভিড় নিয়ে আলোচনা জারি থাকলে কালীপুজোতেও লোকে কিছুটা সতর্ক থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Crowd Kolkata High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE