Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সিবিআই চেয়ে জনস্বার্থ মামলা, প্রতিবাদ পথেও

নারদ নিউজের গোপন ক্যামেরার তোলা ঘুষ নেওয়ার ভিডিও নিয়ে বুধবার তিনটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্তের দাবিই জানানো হয়েছে সেগুলিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৬ ০৩:২৬
Share: Save:

নারদ নিউজের গোপন ক্যামেরার তোলা ঘুষ নেওয়ার ভিডিও নিয়ে বুধবার তিনটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্তের দাবিই জানানো হয়েছে সেগুলিতে। বিধানসভা নির্বাচনের যে সব প্রার্থীকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের প্রার্থী-পদ বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে। মামলার পাশাপাশিই জোরদার আন্দোলনে নামার কথাও জানিয়ে রেখেছে বিরোধীরা।

হাইকোর্টে বুধবার এই মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছে কংগ্রেস, বিজেপি এবং হাইকোর্টের এক আইনজীবীর তরফে। তিনটি মামলার শুনানি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে হবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। মামলাগুলি আজ, বৃহস্পতিবার তালিকাভুক্ত হবে। কাল, শুক্রবার শুনানি হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।

প্রথম মামলাটি এ দিন দায়ের করেন অক্ষয়কুমার সারেঙ্গী নামে হাইকোর্টের এক আইনজীবী। তাঁর আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস জানান, হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো ছাড়াও আদালতকে অনুরোধ করা হয়েছে, ঘুষ নেওয়ার পুরো ভিডিও ফুটেজ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হোক। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ঘুষ নেওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে, তৃণমূলের যে সব বিধায়ক ও সাংসদ ওই ঘটনায় জড়িত, তাঁরা শপথবাক্য পাঠ করার পরে নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব ভুলে দুর্নীতির দিকে ঝুঁকেছেন। ওই বিধায়ক ও সাংসদরা সাংবিধানিক পদকে অসম্মান করেছেন।

দুপুরে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী ও আইনজীবী আবু আব্বাসউদ্দিন দ্বিতীয় জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন। তাঁদের আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের আবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের যে সব বিধায়ক বা মন্ত্রীকে গোপন ক্যামেরায় ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের প্রার্থী-পদ বাতিল করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিক আদালত। সিবিআইকেও আদালত নির্দেশ দিক, গোপন ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলির সত্যতা যাচাই করে আদালতকে জানাতে। গোপন ক্যামেরায় যাঁদের ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-রোধ আইনে মামলা দায়ের করে প্রয়োজনে তাঁদের গ্রেফতার করার আবেদনও করা হয়েছে।

বিকেলে তৃতীয় জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন রাজ্য বিজেপির ব্রজেশ ঝা। ওই আবেদনে সিবিআইয়ের পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে দিয়েও তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, নারদ নিউজের ভিডিওয় আইপিএস অফিসার তথা স্পেশ্যাল স্ট্রাইকিং ফোর্স-এর কম্যান্ডিং অফিসার এসএমএইচ মির্জাকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। মির্জার ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত বলে বিরোধীদের দাবি। নবান্নের কর্তারা অবশ্য মির্জার ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদও চলছে। হাজরা মোড়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস। ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত আজ মিছিল করবে কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার জানিয়েছেন, যে পথ দিয়ে বামেরা মিছিল করবে, সেই পথেই তাঁরা কুৎসা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা মিছিল করবেন।

বামফ্রন্টের বৈঠকে এ দিন সিদ্ধান্ত হয়েছে, নারদ-কাণ্ড নিয়ে জেলায় জেলায় প্রচারে নেমে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করা হবে। বিমানবাবু বলেন, ‘‘নেতা-মন্ত্রী, সাংসদ-বিধায়করা যুক্ত থাকলে দেশের আইন অনুযায়ীই তাঁদের শাস্তি পেতে হবে। আর ঘটনাটি মিথ্যা হলে, যাঁরা এই কাজ করেছেন, আমরা তাঁদের শাস্তি চাই। কিন্তু প্রশাসন তো কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE