পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হোটেল মালিকদের নিয়ে বৈঠক পুলিশের। সোমবার দিঘায়। নিজস্ব চিত্র
কিছুদিন আগেই দিঘা-ওড়িশা বর্ডারের কাছে ধরা পড়েছিল দুই গাঁজা পাচারকারী। ধৃতদের কাছ পুলিশ উদ্ধার করেছিল প্রায় কুড়ি কিলোগ্রাম গাঁজা। মুর্শিদাবাদের ওই দুই পাচারকারী ওড়িশা থেকে দিঘা হয়ে গাঁজা পাচার করছিল বলে পুলিশ জানায়। ওই ঘটনার কিছুদিন আগে, ওড়িশা থেকে জনা কয়েক দুষ্কৃতী দিঘায় ঢুকে বাস চালকদের বেদম মারধর করে। যার জেরে দিঘার বাসচালক ও কর্মীরা ধর্মঘট ডাকায় নাকাল হয়েছিলেন পর্যটকেরা।
একের পর এক এই সব ঘটনা ছাড়াও মাঝেমধ্যে সৈকতে ছোটখাটো অপরাধের ঘটনায় দিঘায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের চিন্তা ছিলই। তা ছাড়া দিঘা-ওড়িশা সীমানায় পর পর এই দুই ঘটনায় অন্য আশঙ্কাও করছে দিঘা তথা জেলার পুলিশ। দিঘায় সারা বছরই পর্যটকদেল ভিড় থাকে। শীতের মরসুমে তা আরও বাড়ে। এই অবস্থায় পুলিশের একাংশ মনে করছেন, সীমানা লাগোয়া হওয়ায় ওড়িশা থেকে দিঘায় ঢুকে দুষ্কর্ম করে ফের ওড়িশায় পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে ওই দুষ্কৃতীদের খোঁজ পাওয়া শক্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় হোটেলে অস্বাভাবিক মৃত্যু, এমনকী খুনের ঘটনাতেও চিন্তিত দিঘার পুলিশ-প্রশাসন।
তাই এই ধরনের ঘটনা রুখতে এবং সে সম্পর্কে হোটেল মালিকদের সতর্ক করতে বৈঠক করল পুলিশ প্রশাসন। দিঘা থানা ও দিঘা উপকূল থানার উদ্যোগে দিঘার হোটেল মালিক ও হোটেল কর্মচারী সংগঠনগুলিকে নিয়ে রবিবার নিউ দিঘার একটি হোটেলে ওই বৈঠক হয়। সেখানে এখন থেকে প্রতিটি হোটেলে নিরাপত্তার খাতিরে সিসিটিভি বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের পরিচয়পত্র সংগ্রহ, তাঁদের ছবি তুলে সমস্ত তথ্য হোটেলের অনলাইন সিস্টেমে আপলোড এবং সংরক্ষিত করার উপরে জোর দিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে জলপথে বা সড়কপথে ওড়িশা সীমানা পেরিয়ে এসে দুষ্কৃতীরা দিঘায় পর্যচকদের যাতে কোনও ক্ষতি করতে না পারে বা কোনও নাশকতা ঘটাতে না পারে, সেই বিষয়েও বৈঠকে সকলকে সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি দিঘায় কোনও বিদেশি পর্যটক এলে সংশ্লিষ্ট হোটেল মালিককে পুলিশকে তা জানাতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে দিঘার পুলিশ এক চিনা পর্যটককে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, ওই চিনা পর্যটকের কাছে ভারতে আসার পাসপোর্ট, ভিসা কিছুই ছিল না।
এ সবের পাশাপাশি সৈকতে দুর্ঘটনা রুখতে আগামী দিনে পুলিশ আরও কড়া ভূমিকা নবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “আপাতত হোটেল মালিকদের সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হল। পরে পরিবহণ–সহ অন্য ক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিয়েও বৈঠক করা হবে।’’
এদিন বৈঠকে ছিলেন দিঘা থানার ওসি বাসুকীনাথ বন্দোপাধ্যায়, দিঘা উপকূল থানার ওসি সঞ্জীব দত্ত, কাঁথির সার্কল ইনস্পেক্টর চম্পক রায় চৌধুরী। ছিলেন হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও কর্মচারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বৈঠকের পর দিঘার এক হোটেল মালিক বলেন, “অনলাইন সিস্টেম নিয়ে আমাদের কিছু অসুবিধা আছে। তা ছাড়া সব সময় ইন্টারনেট থাকে না। ওই সব বিষয় সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy