Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মিলল খোঁজ, শ্রীঘরে বনগাঁর ‘বান্টি-বাবলি’

গত কয়েক মাসে বনগাঁ শহরে বেশ কিছু ফাঁকা বাড়ি থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে সোনা-রুপোর গয়না, মোবাইল ফোন, দামি ক্যামেরা। চোর ধরা পড়েনি। গৃহস্থেরা পুলিশকে দুষেছেন। পুলিশ ছিল অথৈ জলে।

শঙ্কর ও সীমা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

শঙ্কর ও সীমা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৯
Share: Save:

সিনেমার পর্দায় নয়, কে জানত বনগাঁ শহরেই আস্তানা গেড়েছে ‘বান্টি অউর বাবলি’!

গত কয়েক মাসে বনগাঁ শহরে বেশ কিছু ফাঁকা বাড়ি থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে সোনা-রুপোর গয়না, মোবাইল ফোন, দামি ক্যামেরা। চোর ধরা পড়েনি। গৃহস্থেরা পুলিশকে দুষেছেন। পুলিশ ছিল অথৈ জলে। হাজার নজরদারিতেও চুরি ঠেকানো যাচ্ছিল না। শেষমেশ রবিবার রাতে শক্তিগড় থেকে ধরা পড়ল ‘বান্টি অউর বাবলি’— শঙ্কর মণ্ডল এবং তার স্ত্রী সীমা দাস। উদ্ধার হল ১০ ভরিরও বেশি সোনার গয়না, ১২টি মোবাইল এবং একটি ক্যামেরা।

সিনেমার ‘বান্টি’ অভিষেক বচ্চন এবং ‘বাবলি’ রানি মুখোপাধ্যায় চুরি করতে করতে প্রেমে পড়েছিল। তার পরে বিয়ে। বিয়ের পরেও তারা পেশা পাল্টায়নি। গ্রাম থেকে শহরে এসে কখনও বড় ব্যবসায়ী সেজে দোকানে জিনিস কেনার নাম করে ঢুকে লুঠপাট করত। আবার কোথাও মানুষকে বোকা বানিয়েও চলত কেপমারি। তাদের ধরতে ঘুম উবেছিল পুলিশের। শেষমেশ পুলিশ অফিসার অমিতাভ বচ্চন তাদের ধরে ফেলেন।

আরও পড়ুন: প্রচারই সার, হুঁশ ফিরছে না যাত্রীদের

বছর আঠাশের শঙ্কর আগে গরু পাচার এবং ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হওয়ার অভিযোগে বার চারেক পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। বছর কয়েক ধরে সে শুধু চুরিই করছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, বছর খানেক আগে শান্তিপুরে সীমার সঙ্গে তার আলাপ হয়। তার পরে বিয়ে। সীমার অবশ্য এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তার আগের পক্ষের একটি ছেলে রয়েছে।

সংসার তো হল। কিন্তু পেট চলবে কীসে?

পুলিশ জানায়, শঙ্কর নিজের পুরনো পেশাতেই স্ত্রীর হাতেখড়ি করায়। জেরায় শঙ্কর জানিয়েছে, একা চুরি করতে তার অসুবিধা হচ্ছিল। বাইরের কাউকে চুরির ভাগ দিতেও সে রাজি নয়। তাই স্ত্রীকে সঙ্গে নেয়। মহিলা সঙ্গে থাকলে সুবিধা হয়। লোকজন সন্দেহও করে না বলে শঙ্করের দাবি। দম্পতি এখনও পর্যন্ত বনগাঁয় মোট ২৫টি চুরিতে যুক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে। শঙ্কর অবশ্য পুলিশের কাছে দাবি করেছে, তারা চারটি চুরিতে যুক্ত। কী ভাবে চুরি করত দম্পতি?

জেরায় পুলিশ জেনেছে, বিভিন্ন এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত শঙ্কর-সীমা। শক্তিগড়ে আস্তানা গেড়েছিল বছর খানেক। দু’জনে মিলে প্রথমে খোঁজ নিত কোন বাড়ি ফাঁকা থাকবে। সুযোগ বুঝে তারা সেই বাড়িতে হাজির হতো। সীমা রাস্তায় পাহারায় থাকত। শঙ্কর তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে চুরি করত। চুরির জিনিস নির্দিষ্ট কয়েকটি দোকানে তারা বিক্রি করত। ধৃতদের সোমবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

শঙ্কর-সীমার অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘যা করেছি পেটের দায়ে। শখে করেছি নাকি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE