Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

আফরাজুল এক বছরেই বিস্মৃত, কেমন আছেন গুলবাহার?

‘‘স্বামীর মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থের সুদ ও রাজ্য সরকারের তরফে চালু করা বিধবা ভাতার টাকা দিয়েই কোনওরকমে চলছে সংসার।’’ ছোট মেয়ের দশম শ্রেণির লেখাপড়াও চলছে তাতে।

অসহায়: সৈয়দপুরে বাড়ির দাওয়ায় গুলবাহার। ডান দিকে  আফরাজুল খানকে পুড়িয়ে এবং কুপিয়ে মারা আগে শম্ভুলাল। ছবি: জয়ন্ত সেন

অসহায়: সৈয়দপুরে বাড়ির দাওয়ায় গুলবাহার। ডান দিকে আফরাজুল খানকে পুড়িয়ে এবং কুপিয়ে মারা আগে শম্ভুলাল। ছবি: জয়ন্ত সেন

জয়ন্ত সেন 
সৈয়দপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪০
Share: Save:

এক বছর আগের কথা। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর রাজসামান্দ জেলার কাকরোলি গ্রামে রাজস্থানের কাকরোলি গ্রামে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে মারা হয়েছিল মালদহের কালিয়াচকের সৈয়দপুরের বাসিন্দা আফরাজুল খানকে। সেই ঘটনার পরে শোক দখলের লড়াইয়ে সামিল হতে নানা দলের একাধিক সাংসদ, মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রী সহ ভিআইপিদের রোজই আনাগোনা দেখা গিয়েছিল আফরাজুলের বাড়িতে।

বছর ঘুরেছে। নেতা-মন্ত্রীদের আর আনাগোনা নেই সৈয়দপুরের সেই বাড়িতে। স্বামীর মৃত্যুর এক বছর তিন দিন পর রবিবার বাড়ির দাওয়ায় বসে এমনই আক্ষেপের কথা শোনালেন আফরাজুলের স্ত্রী গুলবাহার। বললেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থের সুদ ও রাজ্য সরকারের তরফে চালু করা বিধবা ভাতার টাকা দিয়েই কোনওরকমে চলছে সংসার।’’ ছোট মেয়ের দশম শ্রেণির লেখাপড়াও চলছে তাতে।

গুলবাহারের আক্ষেপ, ‘‘এখন কেউই আর খোঁজ নেয় না আমাদের। আমরা কীভাবে কাটাচ্ছি সেটা জানার প্রয়োজনও মনে করেন না কেউ। তবে, সান্ত্বনা এটাই যে মুখ্যমন্ত্রী মনে রেখেছেন এবং গত ১০ জুলাই মেজ মেয়ে রেজিনাবিবি একটা চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছে।’’ কিন্তু বেতন মাত্র ৬ হাজার টাকা! কর্মস্থলে যেতেই বেতনের অর্ধেক টাকা খরচ হয়ে যেত। অনেক বার দরবার করে এখন কর্মস্থল হয়েছে বাড়ির কিছুটা কাছে। তাতেও যাতায়াতে খরচ মাসে অন্তত দেড় হাজার টাকা!

আর সেই খুনের ঘটনায় মামলার হাল? গুলবাহার জানালেন, ঘটনার পরপর দিল্লি থেকে এসে কিছু আইনজীবী তাঁকে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করিয়েছিল। গত এক বছরে তিনটের মতো শুনানি হয়েছে। চলতি মাসের শেষেও একটি শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু তিনি জানান, মামলাজনিত কারণে দিল্লিতে একবারও ডাক পড়েনি তাঁর।

আফরাজুলের খুনের পরে বিভিন্ন দলের তরফে এই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছিল। গুলবাহার জানান, কিন্তু তাতে আর ক’দিন চলে!

তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘ওখানে আমাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্য সব সময় ওই পরিবারের খোঁজ নেন।’’ এলাকার বিধায়ক কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা শুরু থেকেই ওই পরিবারের পাশে আছি। তাদের খোঁজ বরাবর রাখা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajasthan Hate Murder Malda Afrajul Khan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE