আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে কেরলে মৌসুমি বায়ু ঢুকেছিল নির্ঘণ্টের দিন তিনেক আগেই। এ বার মায়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও পৌঁছে গেল বর্ষা। সে কবে বাংলায় আসবে, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গেও এখন বর্ষার মেজাজ। দক্ষিণবঙ্গে শুক্রবার দিনভর যে-বৃষ্টি হল, আবহাওয়া দফতরের ভাষায় সেটা প্রাক্বর্ষার বর্ষণ।
এ দিন সকাল থেকেই মেঘ আর দফায় দফায় বৃষ্টিতে বর্ষার আবহ ঘনিয়ে আসে কলকাতায়। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরেও বৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আজ, শনিবারেও গাঙ্গেয় বঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিনই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একাংশে বর্ষা ঢুকে পড়েছে। কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মিজোরাম ও মণিপুরে বর্ষা ঢুকেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তার ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা হলে কি বর্ষা ঢুকতে চলেছে বাংলাতেও? আবহবিজ্ঞানীদের বক্তব্য, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বর্ষা ছড়িয়ে পড়ার পরেই বোঝা যাবে, উত্তরবঙ্গে বর্ষা সমাগমের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি না। আর দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে সেই পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, কেরল দিয়ে ঢোকা বর্ষার শাখাটি তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, ওড়িশা পেরিয়ে তবে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। সেই শাখাটি তামিলনাড়ুতে আটকে আছে। আগামী কয়েক দিনে সেটি অন্ধ্র পর্যন্ত আসবে। ওড়িশায় বর্ষা ঢোকার পরিস্থিতি তৈরি না-হলে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার আগমনির আভাস দেওয়া সম্ভব নয়। মৌসম ভবনের খবর, দক্ষিণ ভারতে থাকা বর্ষার শাখাটি দুর্বল। তাই খুব তড়িঘড়ি তার অগ্রগতির আশা নেই।
তা হলে এই বৃষ্টিকে প্রাক্বর্ষার বর্ষণ বলা হচ্ছে কেন? আলিপুরের আবহবিজ্ঞানীরা জানান, এই তকমা দেওয়া হয়েছে বৃষ্টির চরিত্র দেখে। সঞ্জীববাবুর ব্যাখ্যা, গ্রীষ্মে ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় তৈরি হয় কালবৈশাখীর মেঘ। এ দিন কিন্তু মেঘ এসেছে বঙ্গোপসাগর লাগোয়া এলাকা থেকে। ঢুকছে সাগরের জোলো বাতাসও। গ্রীষ্মে কিছু জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ঝড়বৃষ্টি হয়। দ্রুত মেঘ বয়ে যায় এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। বৃষ্টিও বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয় না। এ দিন কিন্তু দিনভর কার্যত দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টি হয়েছে, যার সঙ্গে বর্ষার চরিত্রের মিলই বেশি। ‘‘তা ছাড়া দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার আগমনের নির্দিষ্ট দিন (৮ জুন) এগিয়ে আসছে। সেটাও প্রাক্বর্ষার একটি লক্ষণ,’’ বলছেন সঞ্জীববাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy