নজরদারির জন্য সিসি ক্যামেরা বসেছিল। কিন্তু নানা কারণে তার সিংহভাগই অকেজো হয়েছে। আর তাই এ বার পুলিশের ধাঁচেই কারারক্ষীদের জন্য ‘বডি ক্যামেরা’র সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কারা দফতর। তাঁদের পাশাপাশি, সংশোধনাগারের অন্য আধিকারিকদের জন্য ‘বডি ক্যামেরা’র ব্যবহার হওয়ার কথা। এ নিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কারা দফতরের এক পদস্থ কর্তা। একইসঙ্গে পাঁচিলের উপরের অংশে কাঁটাতারেও বদল আনছে কারা দফতর। সে কারণে ওই কাঁটাতারে বিশেষ প্রযুক্তির একটি যন্ত্র লাগানো হবে। ফলে কাঁটাতারে হাত লাগলেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে।
কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি বিধাননগর, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটেও ‘বডি ক্যামেরা’র ব্যবহার হচ্ছে। সেই ভাবে কারারক্ষী-সহ সংশোধনাগারের অন্যদের জন্যও এই ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারির সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সংশোধনাগারের ভিতরের চিত্র বডি ক্যামেরাতে রেকর্ড হবে। নজরদারির ফাঁক গলে সেখানে যে বিভিন্ন কার্যকলাপ চলে। তা রুখতে বডি ক্যামেরা কার্যকরী হবে।’’ এ ক্ষেত্রে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে প্রথম ‘বডি ক্যামেরা’র ব্যবহার হওয়ার কথা। তার পরে ধাপে ধাপে অন্য কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের পাশাপাশি জেলাগুলিতেও তা শুরু হবে।
আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে মোবাইল, মাদক-সহ ধরা পড়েছেন সেখানের এক অস্থায়ী চিকিৎসক। আবার মালদহে সংশোধনাগারের বন্দিদের হাতে মার খেতে হয়েছে কারারক্ষীদের। সে প্রসঙ্গ তুলেই কারা কর্তাদের বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের ঘটনার সময়ে ক্যামেরা অন থাকলে পুরোটাই রেকর্ড থাকবে। ফলে পরবর্তীতে তদন্তেও সুবিধা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ করা যাবে।’’
বডি ক্যামেরা কী
একটি ক্যামেরা যা শরীরের উর্ধ্বাংশের পোশাকের উপর লাগানো থাকে। কোনও ঘটনার সময়ে তা ব্যবহার করে রেকর্ড করতে পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। এই ক্যামেরার মধ্যে একটি চিপ থাকে। যা বিভিন্ন বিষয় রেকর্ড করে। তবে এটি অন বা অফ করার বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে।
‘বডি ক্যামেরা’র পাশাপাশি অকেজো সিসি ক্যামেরাগুলি সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারা দফতর। সূত্রের খবর, কোথাও সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন আবার কোথাও বা তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, বহু সংশোধনাগারের বন্দিদের পরীক্ষার সময়েও তা সিসি ক্যামেরার অর্ন্তভুক্ত হয় না। আর সে কারণে তার পরিবর্তনও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারা দফতর। এ ক্ষেত্রে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অগ্রাধিকার পেতে চলেছে। সেখানে প্রায় ১০০টির মতো সিসি ক্যামেরা বসতে পারে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সিসি ক্যামেরাগুলি অকেজো হওয়ার পিছনে যেমন বন্দিদের একাংশ থাকেন, তেমনই রক্ষীদের কেউ কেউ জড়িত থাকেন। ক্যামেরার সংখ্যা বাড়লে নষ্ট করতে গেলে অন্যটিতে ধরা পড়বে।’’ সিসি ক্যামেরাগুলির নজরদারি যাতে সরাসরি করা যায়, তার বন্দোবস্ত করতে পারে কারা দফতর।
পাঁচিলের উপরে কাঁটাতারে বিশেষ প্রযুক্তির যন্ত্র বন্দি পালানো রুখতে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী কারা দফতরের কর্তারা। তাঁদের মতে, কাঁটাতারে হাত লাগলেই অ্যালার্ম বেজে উঠলে সতর্ক হতে পারবেন রক্ষীরা। ফলে সেখান থেকে পালাতে গেলে ধরার পড় ভয় থাকবে। তাই হয়তো ‘সাহস’ পাবে না। রাজ্যের সব সংশোধনাগারের পাঁচিলে এমন ভাবে কাঁটাতার নেই বলেই খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy