বিচার শেষ হয়নি। তাই মাদক বিরোধী আইনে গ্রেফতার হওয়ার পরে কেউ পাঁচ বছর, কেউ বা তারও বেশি সময় ধরে বন্দি রয়েছেন রাজ্যের নানা জেলে। অনেকের আবার শুনানি-ই শুরু হয়নি। এর প্রতিবাদে
বন্দিদের একাংশ অনশনকেই হাতিয়ার করেছেন এবং তা জেলে জেলে ছড়িয়ে পড়ায় প্রমাদ গুনছেন কারাকর্তারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিচারপর্ব দ্রুত শেষ করতে রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে চিঠি লিখেছেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।
উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘বিচারপর্ব যাতে গতি পায় সে বিষয়ে আইনমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি।’’ আর মলয়বাবু বলেছেন, ‘‘শুনানি দ্রুত শেষ করতে সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব।’’ কারা সূত্রের খবর, গত দেড় মাসে দমদম, জলপাইগুড়ি ও কৃষ্ণনগর জেলে অনশন করেছেন মাদক বিরোধী আইনে গ্রেফতার হওয়া বন্দিরা। দমদমে ৫০০ বন্দি অনশনে বসেছিলেন। আন্দোলন চলাকালীনই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের সঙ্গে হাতাহাতি বেঁধেছিল ওই বিচারাধীন বন্দিদের। শেষে পুলিশ নামিয়ে অবস্থা সামাল দেন কারা কর্তৃপক্ষ। সেই রেশ মিটতে না মিটতে ফের অনশন শুরু হয় কৃষ্ণনগর জেলে। ৮০ জন বন্দির লাগাতার তিন দিন অনশনে সিঁদুরে মেঘ দেখেন কারাকর্তারা। শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয় কারামন্ত্রীকেই। নিজের জেলায় বন্দিদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে সরবত খাইয়ে অনশন ভাঙান তিনি।
কারা দফতরের তথ্য বলছে, মাদক বিরোধী আইনে গ্রেফতার হওয়া বন্দির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দমদমে, ৯৪৫। বহরমপুরে ৫৭৮, কৃষ্ণনগরে ২৮৩, আলিপুরে ১৬৩। এমনকী কোচবিহারের মতো প্রান্তিক জেলে রয়েছেন ৮৫ জন। সব মিলিয়ে মাদক বিরোধী আইনে গ্রেফতার হওয়া ৩০৫০ জন বন্দি রয়েছেন রাজ্যের জেলগুলিতে। এর মধ্যে ৪০ জনের পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচার চলছে। দু’বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বিচার শেষ হয়নি, এমন বন্দির সংখ্যা দু’শোর কাছাকাছি। আর এক বছর ধরে বন্দি রয়েছেন, অথচ শুনানি শুরু হয়নি, এমন সংখ্যাটা ৪৫০।
নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘মাদক বিরোধী আইনে জামিন পাওয়া শক্ত বলে পুলিশের একাংশ বহু ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীদের ওই ধারায় গ্রেফতার করে। এমনকী, জেলে থাকাকালীন আদালতে হাজির করানোর বিষয়েও তেমন গা লাগায় না। ফলে এক সমস্যা মেটাতে গিয়ে অন্য সমস্যার জন্ম হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy