Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কুয়াশার দোসর অবরোধ, নাকাল ট্রেনযাত্রীরা

ভোর থেকে অবরোধের ফলে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে বিভিন্ন মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। একে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডা। তার উপরে দুপুর পর্যন্ত অবরোধ চলায় যাত্রীদের হয়রানি তুঙ্গে ওঠে।

ব্যাঘাত: ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের ১২ ঘণ্টার রেল অবরোধ। সোমবার সকালে পুরুলিয়ার বরাভূমে। নিজস্ব চিত্র

ব্যাঘাত: ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের ১২ ঘণ্টার রেল অবরোধ। সোমবার সকালে পুরুলিয়ার বরাভূমে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২০
Share: Save:

কুয়াশার দাপটে ট্রেন দেরিতে চলায় এমনিতেই যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা নেই। তার মধ্যে সোমবার ভোর থেকে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের অবরোধের জেরে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে গেল রেল পরিষেবা।

ভোর থেকে অবরোধের ফলে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে বিভিন্ন মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। একে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডা। তার উপরে দুপুর পর্যন্ত অবরোধ চলায় যাত্রীদের হয়রানি তুঙ্গে ওঠে। দুপুরে অবরোধ ওঠার পরে আটকে থাকা ট্রেনগুলি ফের চলতে শুরু করে।

ঝাড়খণ্ডে আদিবাসীদের জমি-বাড়ি, অন্যান্য সম্পত্তি সুরক্ষার আইন ‘ছোটনাগপুর টেনেন্সি অ্যাক্ট ও সাঁওতাল পরগনা টেনেন্সি অ্যাক্ট’ সংশোধনের প্রস্তাব রাজ্যপালের কাছে পেশ করেছে ঝাড়খণ্ড সরকার। তাতেই আপত্তি আদিবাসী নেতাদের। তাঁদের বক্তব্য, ওই আইন সংশোধন করলে আদিবাসীদের অধিকার খর্ব হবে। তাই রেল অবরোধ।

আরও পড়ুন: দিনভর দুর্ভোগে পাতে শুধু ডিমভাত

ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীদের সমস্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রেল অবরোধ কেন? ‘‘ঝাড়খণ্ড বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, আদিবাসীরা এক। অধিকার খর্ব হওয়া মানে সকলেই বিপদে পড়তে পারেন। তাই অবরোধ,’’ বলেন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি পানমণি বেসরা।

অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছিল অনেক দিন আগেই। রেল এবং স্থানীয় প্রশাসনও তা জানত। কিন্তু তার মোকাবিলায় রেল ব্যবস্থা না-নেওয়ায় দূরপাল্লার বিভিন্ন ট্রেনের হাজার হাজার যাত্রী বিপাকে পডলেন। যাত্রীদের অভিযোগ, আগে থেকে সব জেনেও পরিস্থিতির মোকাবিলায় রেল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কথা বলেনি রাজ্যের সঙ্গে। তাই পরিস্থিতি চরম আকার নেয়।

পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খবর, ভোর ৬টা থেকে অবরোধের ফলে রাজধানী, শতাব্দী এক্সপ্রেস-সহ বহু ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে। ওল্ড মালদহ স্টেশনে আটকে ছিল পদাতিক এক্সপ্রেস। মালদহ স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র মেল-সহ চারটি ট্রেন থমকে যায়। অবরোধ ও কুয়াশার জেরে বিভূতি এক্সপ্রেস বর্ধমানে পৌঁছয় সাড়ে ছ’ঘণ্টা দেরিতে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনে অবরোধ হয় আদ্রা, মধুকুণ্ডা, ইন্দ্রবিল ও কাঁটাডি স্টেশনে। ভুবনেশ্বর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস বাঁকুড়ার ঝাঁটিপাহাড়ি স্টেশনে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। পরে সেটিকে চালানো হয় ঘুরপথে। আদ্রায় প্রায় সাত ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল হাওড়ামুখী পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেস। বর্ধমান কর্ড লাইনে লোকাল-সহ বহু ট্রেন আটকে পড়ে। আরপিএফ অবরোধ তুলে দিলে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

ডালখোলা-সহ বিহারের বিভিন্ন স্টেশনে রেল অবরোধ শুরু হয় সকাল ৬টায়। চলে সড়ক অবরোধও। খুরিয়াল স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে নিউ জলপাইগুড়িমুখী দার্জিলিং মেল। কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস আজমনগরে এবং পদাতিক এক্সপ্রেস ওল্ড মালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে। কাটিহার স্টেশনে সকাল থেকে আটকে পড়ে রাজধানী এক্সপ্রেস এবং ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস। চেন্নাই এগমোর এক্সপ্রেস কিসানগঞ্জে, কামাখ্যাপুরী এক্সপ্রেস তেলতা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে দীর্ঘ ক্ষণ। কলকাতা-গুয়াহাটি গরিবরথ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল সুধানি স্টেশনে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে আটকে পড়ে দিল্লিগামী অওধ-অসম এক্সপ্রেস এবং কলকাতামুখী কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। দুপুরের পরে অবরোধ উঠে যায়। খুরিয়াল স্টেশনে দীর্ঘ ক্ষণ আটকে থাকা দার্জিলিং মেল ছাড়ে বেলা আড়াইটে নাগাদ।

পূর্ব রেলের খবর, হাওড়া ও শিয়ালদহমুখী ট্রেনগুলি দেরিতে পৌঁছনোয় রাতের বহু ট্রেনই বাতিল করতে বা সূচি বদলে চালাতে হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE