Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
লোকসভা-বিধানসভা ভোট

পঞ্চায়েতে পদ না ছেড়ে প্রার্থী করার সওয়াল

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে চুরি রুখতে শুক্রবারই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জন্য ভাতা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই পাশাপাশি পঞ্চায়েতের কাজে পারদর্শিতা আনতে এবং পদাধিকারীদের পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তুলতে এ বার নয়া কৌশল নিচ্ছে তাঁর সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে চুরি রুখতে শুক্রবারই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জন্য ভাতা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই পাশাপাশি পঞ্চায়েতের কাজে পারদর্শিতা আনতে এবং পদাধিকারীদের পরস্পরের মধ্যে প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তুলতে এ বার নয়া কৌশল নিচ্ছে তাঁর সরকার। তা হল, পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সদস্য তথা পদাধিকারীদেরও বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ করে দেওয়া। এ জন্য আইন সংশোধনের কথা বিবেচনা করছে নবান্ন।

প্রসঙ্গত, পুরসভার কাউন্সিলররা বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হলে তাঁকে পুর-পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয় না। বিধায়ক বা সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পরেও তিনি পুরসভার পদ ধরে রাখতে পারেন। যেমন— তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হলেও একই সঙ্গে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে দীর্ঘদিন ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু পঞ্চায়েতের সদস্যদের সেই সুযোগ নেই। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, তাঁরা বিধানসভা বা লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইলে তাঁদের আগে পঞ্চায়েতের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। যেমন— উত্তর ২৪ পরগনার প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল এখন দেগঙ্গার বিধায়ক। কিন্তু বিধানসভা ভোটে লড়ার আগে তাঁকে জেলা পরিষদের পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল।

কিন্তু এই নিয়মটাই এ বার বদলের সুপারিশ করেছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কলকাতায় শুক্রবার শুরু হওয়া দু’দিনের রাজ্য পঞ্চায়েত সম্মেলন শনিবার শেষ হল। তার পর সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের সদস্যরাও যাতে বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে পারেন, সে জন্য আইন সংশোধনের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। উনি প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। এ ব্যাপারে সংশোধনের প্রস্তাব সরকারি ভাবে তাঁর কাছে পাঠাব।’’

প্রশ্ন হল, হঠাৎ কেন এই ভাবনা? শাসক দলের একটি সূত্র বলছে, পঞ্চায়েত সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, চুরি বরদাস্ত করা হবে না। আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে যেটুকু তহবিল রয়েছে, তা দিয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিরা যাতে উদ্যমের সঙ্গে সেই কাজ করেন, সেই জন্যই এই ‘পুরস্কার’-এর প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, কাজ ভাল করলে পঞ্চায়েতের কোনও সদস্য বা পদাধিকারীকে ভবিষ্যতে বিধানসভা ভোটে প্রার্থীও করা হতে পারে। সে জন্য তাঁর বর্তমান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আবার দলের এক রাজ্য নেতার মতে, গত বিধানসভা ভোটে তৎকালীন বিধায়কদের প্রায় সকলকেই টিকিট দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু ভবিষ্যতে কাজের নিরিখে জেলায় জেলায় বিধায়ক পদে বদল আনার ভাবনা তাঁর মনে রয়েছে। হতে পারে, সে সব সাত পাঁচ ভেবেই সুব্রতবাবুর প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Post Minister
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE