রক্ষা: হাওড়া-দিঘা এক্সপ্রেসের ‘ব্রেক প্রেশার’ পাইপ জুড়তে কামরার নীচে ঢুকেছিলেন ট্রেনের গার্ড এস এন রায়। আচমকা ট্রেনটি চলতে শুরু করায় দু’টি কামরার সংযোগস্থলে থাকা প্রধান ‘ফিড-পাইপের’ উপরে উঠে বসে কোন রকমে প্রাণ বাঁচান তিনি। নিজস্ব চিত্র
হাওড়া-দিঘা এক্সপ্রেসের ঘটনায় ওয়াকিটকির ‘বার্তা বিভ্রান্তি’-কেই সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করছেন রেলের তদন্তকারীরা। শুক্রবার ওই ট্রেনের গার্ড ‘ব্রেক পাইপ’ লাগানোর সময় ট্রেনটি চালাতে শুরু করেন চালক। কোনও মতে অক্ষত থাকেন গার্ড। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে রেলের একটি সূত্রের দাবি, ওয়াকিটকির একই তরঙ্গে (ফ্রিকোয়েন্সি চ্যানেল) চালক, গার্ড, স্টেশন মাস্টারেরা কথা বলেন। সম্ভবত, ওই এলাকায় থাকা অন্য কোনও ট্রেনের গার্ডের নির্দেশ দিঘা এক্সপ্রেসের চালক তাঁর ওয়াকিটকিতে শুনেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, এই নির্দেশ তাঁর ট্রেনের গার্ডই দিয়েছেন।
তবে দক্ষিণ-পূর্ব রেল সরকারি ভাবে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। তাদের মুখপাত্র সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রিপোর্ট পেলে সব স্পষ্ট হবে।” শনিবারই এ ব্যাপারে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি। তবে রেলের একটি সূত্র বলছে, ওয়াকিটকি যন্ত্রে এমন বিভ্রান্তি হলে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়।
শুক্রবার হাওড়া স্টেশনে নিউ কমপ্লেক্সের ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে সকাল ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ হাওড়া-দিঘা এসি এক্সপ্রেস ছাড়ে। মিনিট দশেক পরে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে চাঁদমারি ব্রিজের কাছে পিছনের দিকে দুটি কামরার সংযোগস্থলে থাকা ‘ব্রেক প্রেশার’ পাইপ খুলে গিয়ে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। ট্রেনের গার্ড এস এন রায় ‘ব্রেক প্রেশার’ পাইপ জুড়তে কামরার নীচে ঢোকেন। পাইপ জোড়ার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই চলতে শুরু করে ট্রেনটি। প্রাণ বাঁচাতে গার্ড দু’টি কামরার সংযোগস্থলে থাকা প্রধান ‘ফিড-পাইপের’ উপরে উঠে বসেন।
দেখুন ভিডিয়ো:
রেল সূত্রের খবর, এই ঘটনার সময় আশপাশে থাকা রেলরক্ষী বাহিনীর (আরপিএফ) জওয়ানেরা চেঁচিয়ে উঠলে চেন টেনে থামানো হয় ট্রেনটি। অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসেন গার্ড। রেলের অফিসারেরা বলছেন, ওই অবস্থায় ফিড পাইপের উপরে চড়ে বসে উপস্থিত বুদ্ধি ও শক্ত স্নায়ুর পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রেললাইনে নেমে এয়ার পাইপ ঠিক করছিলেন গার্ড, চলতে শুরু করল ট্রেন, তার পর...
রেল সূত্রের খবর, ঘটনার পরে আতঙ্কিত গার্ডকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় অন্য এক গার্ড ট্রেনের দায়িত্ব নেন। তবে চালক বদলানো হয়নি। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অন্দরে। ৩ জন অফিসারকে নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি হয়। রেল সূত্রের খবর, ওয়াকিটকি বিভ্রাটের পাশাপাশি গার্ড ট্রেনের তলায় ঢোকার আগে চালককে জানিয়েছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ট্রেনের ‘ব্রেক প্রেশার’ পাইপ খোলার পরে ইঞ্জিনের ‘ব্রেক’ ঠিক মতো আটকানো হয়েছিল কি না, তা-ও দেখছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy