ঠাঁই: ঘর হারিয়ে রাস্তাতেই আশ্রয়। মেলেনি ত্রিপলও। ইংরেজবাজারের বালুরচরে। ছবি: অভিজিৎ সাহা।
শুধু এই রাজ্যের নয়, বিহার ও বাংলাদেশের বৃষ্টির চাপও বইতে হচ্ছে। তাতেই মালদহ ও দুই দিনাজপুরে বৃষ্টি থেমে গেলেও, বন্যা কমছে না।
শুক্রবার দুপুর ১২টার সময় মহানন্দার জলস্তর চরম বিপদসীমার চেয়েও এক মিটার বেড়ে ২২.৭২ মিটারে দাঁড়িয়েছে। ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ, বালুরঘাট ও রায়গঞ্জ শহরের মধ্যে জল ঢুকে গিয়েছে। অথচ দু’দিন ধরে তেমন বৃষ্টি নেই।
তা হলে কেন নদীর জল বাড়ছে?
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, উপরের দিক থেকে নেপাল ও বিহারের অঢেল জল মহানন্দায় নামছে। আবার মহানন্দার নীচের দিকে বাংলাদেশে বন্যা হওয়ায় সেখানেও নদী ভরে রয়েছে। তার সঙ্গে অসমের বন্যার জল ব্রহ্মপুত্র হয়ে পদ্মায় মেশায় তারও জলস্তর ফুলে উঠেছে। উপর ও নীচ দুই দিকের চাপে উপচে পড়ছে মহানন্দার মাঝের অংশ। আর তাতেই মালদহ ও দুই দিনাজপুর ভাসছে।
মহানন্দা শিলিগুড়ি থেকে নেমে বিহারে ঢুকেছে। সেখান থেকে ফুলহার ও মহানন্দা নামে দুটো ভাগে বইছে। ফুলহার মালদহে এসে পরে গঙ্গায় মিশেছে। আর মহানন্দা ইংরেজবাজার হয়ে বেশ খানিকটা দূরে গিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে গিয়ে পদ্মায় মিশেছে। সেচ কর্তারা জানান, নেপাল ও বিহারের বন্যার ফলে সেখানকার অতিরিক্ত জল তাই ফুলহার ও মহানন্দা হয়ে মালদহে এসে ঢুকছে। কিন্তু গঙ্গার জলস্তর বেড়ে থাকায় ফুলহারের জল নামতে না পেরে যেমন হরিশচন্দ্রপুর ও রতুয়ার একাংশ ডুবিয়ে দিয়েছে, তেমনই আবার বাংলাদেশে মহানন্দা ভরে থাকায় এ রাজ্যে ওই নদীর জলস্তর কমছে না।
আরও পড়ুন: মাঝরাতে জোরালো বিস্ফোরণ দার্জিলিঙে
বাংলাদেশের বৃষ্টির জলেই দক্ষিণ দিনাজপুরের পুনর্ভবা, আত্রেয়ী, টাঙন নদীর জলও নামতে পারছে না বলে দাবি সেচ কর্তাদের। পুনর্ভবা ও টাঙন বাংলাদেশ থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের ভিতর দিয়ে মালদহ হয়ে ফের বাংলাদেশে মহানন্দাতে মিশেছে। আত্রেয়ীও বাংলাদেশ থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ফের বাংলাদেশে পদ্মায় মিলছে। এই তিন নদী বেয়ে বাংলাদেশের জল ঢুকছে এ রাজ্যে। আবার বাংলাদেশের নিজস্ব বৃষ্টি ও অসমের জল ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে গিয়ে পদ্মার জলস্তরকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
সেচ কর্তাদের অনুমান, সমস্যাটা সেখানেই। মহানন্দার জল নামতে পারছে না। তাই পুনর্ভবা, আত্রেয়ী, টাঙনের জলও নামতে না পেরে উপরের দিকে ঠেলে উঠছে। তেমনই, নেপাল ও বিহারের জল কুলিক ও নাগার নদী হয়ে ইটাহার এসে মহানন্দায় মিশলে তা বেরনোরও উপায় নেই।
রাজীববাবু বলেন, ‘‘আমাদের অতি বৃষ্টির সঙ্গে অন্যদের অতিরিক্ত জল বহন করতে গিয়েই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy