Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের খাবারে বৃদ্ধি ২২ পয়সা! ক্ষুব্ধ শিক্ষককুল

স্কুলের মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানানো হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এত দিন পরে কেন্দ্রীয় সরকার সেটা বাড়াল। কিন্তু সেই বৃদ্ধি এতই সামান্য যে, ক্ষোভ প্রশমিত হল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১১
Share: Save:

স্কুলের মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানানো হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এত দিন পরে কেন্দ্রীয় সরকার সেটা বাড়াল। কিন্তু সেই বৃদ্ধি এতই সামান্য যে, ক্ষোভ প্রশমিত হল না।

এখন প্রাথমিক স্তরে দুপুরের খাবারের জন্য পড়ুয়া-পিছু বরাদ্দ মোটে ৪.১৩ টাকা! উচ্চ প্রাথমিকে ৬.১৮ টাকা। সম্প্রতি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের স্কুলশিক্ষা বিভাগের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মিড-ডে মিলে পড়ুয়া-পিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে যথাক্রমে ৪.৩৫ এবং ৬.৫১ টাকা করা হল। অর্থাৎ প্রাথমিকে বাড়ল ২২ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৩৩ পয়সা! শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, এটাকে কোনও ভাবেই বরাদ্দ বৃদ্ধি বলা যায় না। এটা নেহাতই লোকদেখানো পদক্ষেপ।

নিয়ম অনুযায়ী মিড-ডে মিল প্রকল্পে মোট বরাদ্দের ৬০ শতাংশ দেয় কেন্দ্র, বাকিটা দেয় রাজ্য। সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইচ্ছা করলে কোনও রাজ্য সরকার এই প্রকল্পে তাদের প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বাড়াতে পারে।

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০০১ সালে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে মিল প্রকল্প শুরু হয়। সারা দেশে সেটা চালু হয় ২০০৪ সাল নাগাদ। ২০০৪ থেকে ২০১৪-’১৫ আর্থিক বর্ষে কেন্দ্র মিড-ডে মিল খাতে সাত শতাংশ হারে বরাদ্দ বাড়িয়েছিল। ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে সামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধির পরে আর তা বাড়েনি। এ বার তা বাড়ল। কিন্তু সেটা এতই কম যে, কাজের কাজ হবে না।

সপ্তাহে ছ’দিনই মিড-ডে মিল দেওয়ার কথা। এবং সপ্তাহে অন্তত দু’দিন পাতে ডিম দেওয়া হয়। ‘ভেজ প্রোটিন’ বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের জন্য দেওয়া হয় সয়াবিন এবং ডাল, সঙ্গে তরকারি। তার সঙ্গে যোগ হয় রান্নার গ্যাসের খরচ। গ্যাসের দাম গত এক বছরে যে-ভাবে ধাপে ধাপে বেড়েছে, তাতে এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে কী ভাবে মিড-ডে মিল সুষ্ঠু ভাবে চালানো যাবে, ভেবে কূল পাচ্ছেন না প্রধান শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা আগেই দাবি তুলেছিলেন, অন্তত এক টাকা ভর্তুকি না-দিলে মিড-ডে মিল চালানো সম্ভব হচ্ছে না। রাজ্য প্রশ্ন তুলেছিল, সরকার আর কত ভর্তুকি দেবে? এ দিন এক টাকাও বরাদ্দ বৃদ্ধি না-হওয়ায় শিক্ষকদের মাথায় হাত।

প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রীদাম জানা বলেন, ‘‘যাঁরা এই সব খরচ নির্ধারণ করেন, তাঁরা নিজেরা কি বাজারে যান? প্রতি সপ্তাহে ডাল, আনাজ, সয়াবিন, অন্তত দু’বার ডিম দিতে হয়। এই টাকায় কি সেটা সম্ভব?’’ তিনি জানান, বহু স্কুল নিজেদের তহবিল থেকে মাসে দু’বার মাংসও খাওয়ায় পড়ুয়াদের। সর্বশিক্ষা অভিযানের অঙ্গ হিসেবে কাকদ্বীপের পাঁচটি স্কুলে পরীক্ষামূলক ভাবে ফল দেওয়া শুরু হয়েছে। তারাই বা কোথা থেকে টাকা পাবে? শ্রীদামবাবুর মতে, পড়ুয়া-পিছু অন্তত ১২ টাকা বরাদ্দ করা উচিত। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘এই হারে বরাদ্দ বৃদ্ধি কোনও কাজের কথাই নয়। মাথাপিছু বরাদ্দ অন্তত ১০ টাকা করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE