ভোটের সময়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বিজেপি কারচুপি করতে পারে বলে শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিলেন তিনি।
এ দিন দলীয় কর্মীদের ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট (ভোটার ভেরিফায়েব্ল পেপার অডিট ট্রেল) সম্পর্কে সতর্ক করে মমতা বলেন, ‘‘৪০% ইভিএম-এ বিজেপি কারচুপি করতে পারে। ইভিএম-এ খেয়াল রাখতে হবে। তাই এক বার নয়, তিন বার করে দেখে নিতে হবে ইভিএম। প্রয়োজনে তিন দফায় কর্মী রেখে খেয়াল রাখতে হবে।’’ ভিভিপ্যাট-এ খেয়াল রাখতে অতিরিক্ত কর্মী রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। বিজেপি নেতা রাহুল সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এখন ৪০% ইভিএমে কারচুপির গল্প শোনাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে ভয় পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হবে। পঞ্চায়েতের মতো বুথ দখল করতে পারবেন না। তাই আগেভাগে কারচুপির গান গাইছেন।’’
জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, প্রতিটি ইভিএম-ভিভিপ্যাট রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পরীক্ষা করা হয়। যা তিন দফাতে হয়। প্রথমটি ‘ফার্স্ট লেভেল অফ চেকিং’ (এফএলসি), দ্বিতীয়টি ‘কমিশনিং’ আর ভোটের দিন সকালে পরীক্ষা করা হয়। প্রতি পর্বেই ‘মক পোল’ হয়।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেই এখন প্রথম দফায় ইভিএম পরীক্ষার কাজ চলছে। কমিশনের ভাষায়, যা ‘এফএলসি’। সাধারণত, এই ‘এফএলসি’ জেলা সদরে করা হয়। ‘এফএলসি’র সময়ে ইভিএম-এ থাকা ১৬টি বোতামেই একটি করে ভোট দিয়ে তা পরীক্ষা করা হয়। এর পরে জেলা সদরে থাকা ইভিএমে-এর মধ্যে পাঁচ শতাংশ ইচ্ছা মতো বাছতে পারেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। তার মধ্যে এক শতাংশ ইভিএম-এ ১২০০ ভোট দেওয়া হয়। দুই শতাংশ করে ইভিএম-এ ১০০০ এবং ৫০০ ভোট দেওয়া হয়। এরপরে তা গণনা করা হয়। এরপরে কমিশনের প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করার পরে সেই সব ইভিএম-ভিভিপ্যাট ‘ওয়্যারহাউসে’ চলে যায়। এরপর ওইসব ইভিএম-ভিভিপ্যাট দিন পনেরো আগে নির্দিষ্ট সংসদীয় বা বিধানসভা এলাকার প্রার্থীদের নাম সম্বলিত ব্যালট পেপার ইভিএম-এ দেওয়া হয়। সেই অবস্থায় ‘মক পোল’ হয়। যাকে ‘কমিশনিং’ বলে কমিশন। সেখানেও থাকেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। ভোটের দিন সকালে প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিতিতে ‘মক পোল’ করা হয়। তবে ‘এফএলসি’র সময়ে কোনও ইভিএম-ভিভিপ্যাট-এ ক্রটি ধরা পড়লে প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বেল) এবং ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড-এ (ইসিআইএল) সাত দিনের মধ্যে পাঠানো হয়। সে কারণে কমিশন সূত্রের দাবি, সবটাই দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে হয়। তাই কারচুপির কোনও প্রশ্ন নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy