Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ধোঁয়ায় ভরা ঘরে মৃত্যু দম্পতির

বেলা পর্যন্ত দরজা-জানলা বন্ধ। বাড়ি থেকে কাউকে বেরোতে না দেখে সন্দেহ হয়েছিল প্রতিবেশীদের। ধাক্কা দিয়ে জানলা খুলে তাঁরা দেখেন, ঘরে অচেতন পড়ে রয়েছেন দম্পতি ও তাঁদের ছেলে।

হাসপাতালে মৃত দম্পতির ছেলে বাবলা ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে মৃত দম্পতির ছেলে বাবলা ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৮
Share: Save:

বেলা পর্যন্ত দরজা-জানলা বন্ধ। বাড়ি থেকে কাউকে বেরোতে না দেখে সন্দেহ হয়েছিল প্রতিবেশীদের। ধাক্কা দিয়ে জানলা খুলে তাঁরা দেখেন, ঘরে অচেতন পড়ে রয়েছেন দম্পতি ও তাঁদের ছেলে। মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে দম্পতিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসা চলছে বছর আঠারোর ছেলেটির।

পড়শিদের দাবি, দরজা ভেঙে ঢুকে দেখা যায়, ঘর ধোঁয়ায় ভরে রয়েছে। পুলিশ জানায়, ঠান্ডায় দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরের ভিতরে উনুন জ্বেলে ঘুমিয়েছিলেন ছোটু ভুঁইয়া (৫০), তাঁর স্ত্রী প্রমীলাদেবী (৪৪) ও ছেলে বাবলা। সেই ধোঁয়ায় ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধ হয়ে এমনটা ঘটেছে বলে চিকিৎসকদের অনুমান। ময়না-তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

পাণ্ডবেশ্বরের ফুলবাগানে ইসিএলের খনিতে কর্মরত ছিলেন ছোটুবাবু। তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট ছেলে মামাবাড়িতে থাকে। কেন্দ্রার এবি পিট ভুঁইয়াপাড়ায় খনি আবাসনে স্ত্রী ও বড় ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি। প্রতিবেশী তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায়, বেনারসি ভুঁইয়ারা জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ছোটুবাবুদের ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে তাঁরা বাইরের টিনের দরজা ধাক্কা দিয়ে খোলেন। ঘরের জানলা ধাক্কা দিয়ে খুলতেই দেখা যায়, তিন জন অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছেন। পাণ্ডবেশ্বর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

অদূরেই থাকেন ছোটুবাবুর ভাই ভোলা ভুঁইয়া। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ঘরে উনুন জ্বেলে ঘুমোনোর জন্যই এত বড় বিপদ হল বলে মনে হচ্ছে। ভাইপো সুস্থ হলে বিষয়টা হয়তো পরিষ্কার হবে।’’ ইচ্ছাকৃত ভাবেই এমনটা করা হয়েছিল কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত পর্যন্ত বাবলার জ্ঞান ফেরেনি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আসানসোল জেলা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার শ্যামল সান্যাল বলেন, ‘‘বদ্ধ ঘরে আগুন জ্বেলে রাখলে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস তৈরি হয়। সেখানে কেউ ঘুমিয়ে থাকলে বিষাক্ত ওই গ্যাস শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। তাতে মৃত্যু ঘটতেই পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Fire Unnatural Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE