Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কী করে দুর্ঘটনা, শোকের মধ্যেও অবাক এনায়েতপুর

মাত্র দু’দিন আগে কাজে যোগ দিতে ভদোহী গিয়েছিলেন দুই ভাই মহম্মদ গফ্ফর আলি ও মহম্মদ সুভন আনসারি। এ দিন তাঁদের বাড়িতে হাহাকার। তাঁদের কাকা আব্দুল কামাল মোমিনের ঘরেও বুক চাপড়ে কাঁদছেন আত্মীয়েরা।

হাহাকার: মৃত শ্রমিকদের পরিবার। শনিবার এনায়েতপুরে। নিজস্ব চিত্র

হাহাকার: মৃত শ্রমিকদের পরিবার। শনিবার এনায়েতপুরে। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
মানিকচক শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
Share: Save:

দুই গ্রামের মধ্যে দূরত্ব সাতশো কিলোমিটারেরও বেশি। শনিবার সকালে উত্তরপ্রদেশের ভদোহী থেকে এক ফোনে কান্নার রোল পড়ে গেল মালদহের এনায়েতপুরের একাধিক বাড়িতে।

মাত্র দু’দিন আগে কাজে যোগ দিতে ভদোহী গিয়েছিলেন দুই ভাই মহম্মদ গফ্ফর আলি ও মহম্মদ সুভন আনসারি। এ দিন তাঁদের বাড়িতে হাহাকার। তাঁদের কাকা আব্দুল কামাল মোমিনের ঘরেও বুক চাপড়ে কাঁদছেন আত্মীয়েরা। কিছু দূর গেলেই আব্দুল কাদির ও জাহাঙ্গির মোমিনের বাড়ি। এই দুই ভাইয়ের ঘরেও শোক।

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার এই এক ফোন গোটা মহল্লাকে জানিয়ে দিয়েছে, বারাণসী থেকে কিছু দূরের গ্রাম ভদোহীতে যে কার্পেট তৈরির কারখানায় কাজ করতেন এনায়েতপুরের বেশ কয়েক জন বাসিন্দা, সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে। যে ১৩ জন মারা গিয়েছেন ওই ঘটনায়, তার মধ্যে রয়েছেন এই এলাকার আট জন। আছেন পাশের কামালপুরের আরও এক জন। পুরোটাই মানিকচক থানার অধীনে।

সুভন ও গফ্ফরের বাবা মহম্মদ মজিদ আনসারি বলেন, “অনেক দিন ধরেই ওরা কার্পেট তৈরির কাজ করে। ভাল কাজও শিখেছিল। এ বার গ্রামে থেকেই কার্পেট তৈরি করবে বলে ভাবছিল ওরা। কিন্তু সব কিছু তো শেষ হয়ে গেল!’’ দুই ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ জাহাঙ্গিরের বাবা সাধরুল মোমিন। তিনি বলেন, “আমাদের সব শেষ! কী করে এমন হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।”

আরও পড়ুন: কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত মালদহের ৯​

আরও পড়ুন: স্থায়ী বাসিন্দা নিয়ে বিরোধে উত্তপ্ত ইটানগর, জারি কার্ফু

প্রতিবেশীরা জানালেন, প্রায় দু’দশক ধরে ভদোহীতে কার্পেট তৈরির কাজে যাচ্ছেন গ্রামের শ্রমিকেরা। কিন্তু কার্পেট কারখানায় বিস্ফোরণ কী করে হল, কেউই বুঝতে পারছেন না। এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আবু কালাম আজাদ বলেন, “ফোন করে গ্রামেরই অন্য শ্রমিকেরা ঘটনাটি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন কাউকে ফোনে পাচ্ছি না। উদ্বেগ আরও বেড়েছে।” এ দিন দুপুরে এনায়েতপুর যান মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল এবং জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য। ছিলেন পুলিশ প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক। জেলাশাসক বলেন, “উত্তরপ্রদেশ থেকে মৃতদেহ আনার পরিকল্পনা চলছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কমিটি গড়া হয়েছে। তাঁরা উত্তরপ্রদেশ রওনা দিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE