Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

যুবককে পুড়িয়ে খুন, অভিযুক্ত প্রেমিকাই!

মৃত রঞ্জিত মণ্ডল (২১) ভূপতিনগর থানার দক্ষিণ বায়েনদার বাসিন্দা। তবে কয়েক বছর ধরে খানজাদাপুরে মামাবাড়িতে থাকতেন তিনি। শুক্রবার গভীর রাতে খানজাদাপুরের কাছেই তাঁর দগ্ধ দেহ মেলে।

রঞ্জিত মণ্ডল

রঞ্জিত মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভূপতিনগর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৬
Share: Save:

সম্পর্কের টানাপড়েনে এক যুবককে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে। অভিযোগের তির ওই যুবকের প্রেমিকা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে।

মৃত রঞ্জিত মণ্ডল (২১) ভূপতিনগর থানার দক্ষিণ বায়েনদার বাসিন্দা। তবে কয়েক বছর ধরে খানজাদাপুরে মামাবাড়িতে থাকতেন তিনি। শুক্রবার গভীর রাতে খানজাদাপুরের কাছেই তাঁর দগ্ধ দেহ মেলে। রঞ্জিতের সঙ্গে যে তরুণীর সম্পর্কের জেরে এই ঘটনা বলে অভিযোগ, সেই সায়নী মণ্ডলের বাড়িও খানজাদাপুরে। স্থানীয় উদবাদল গ্রামে ভাড়া থাকেন রঞ্জিতের দাদা সুরজিৎ মণ্ডল। তিনি জওয়ান। শুক্রবার রাত তিনটে নাগাদ সুরজিৎ স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে খানজাদাপুরে পৌঁছন। সুরজিতের দাবি, সায়নীদের বাড়ির কাছেই ঝোপের পাশে পড়েছিল রঞ্জিতের অগ্নিদগ্ধ দেহ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগটুকুও মেলেনি।

সুরজিৎ বলেন, “গিয়ে দেখি ভাইয়ের দেহটা জ্বলছে। পাশেই ওর মানিব্যাগটা পড়েছিল। নিজে গায়ে আগুন লাগালে তো আর মানিব্যাগ বাইরে ফেলে দিত না!’’ তা ছাড়া পাশেই ছিল পুকুর। প্রাণে বাঁচতে রঞ্জিত কেন পুকুরে ঝাঁপ দিলেন না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সুরজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘সব দেখে মনে হচ্ছে ভাইকে মারধর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সায়নী, তাঁর বাবা, মা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন রঞ্জিতের বাবা শক্তিপদ মণ্ডল। পুলিশ ওই চার জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন , “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’’

রঞ্জিতের মায়ের মৃত্যুর পরে শক্তিপদ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই থেকে রঞ্জিত মামাবাড়িতে থাকতেন। সেই সূত্রেই সায়নীর সঙ্গে রঞ্জিতের সম্পর্ক তৈরি হয় বলে সুরজিতের দাবি। সুরজিৎ বলেন, ‘‘ওদের পাঁচ বছরের প্রেম। দু’জনের বাড়িতেও সবাই সব জানে।’’ কিন্তু কিছু দিন হল সায়নী দামি মোবাইল, সোনার গয়না উপহার হিসেবে চাইছিলেন এবং তার জেরে দু’জনের মন কষাকষি হয় বলে দাবি করেছেন সুরজিৎ।

রঞ্জিত আগে দিল্লিতে সোনার দোকানে কাজ করতেন। মাস চারেক আগে তিনি কলকাতার একটি সোনার দোকানে কাজ নিয়ে চলে আসেন। আর দিন চারেক আগে খানজাদাপুরে ফিরেছিলেন রঞ্জিত। মৃতের পরিবারের দাবি, শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ ‘কলকাতা যাচ্ছি’ বলেই বেরিয়েছিলেন রঞ্জিত। তারপর সন্ধে সাতটা নাগাদ হঠাৎ মামাবাড়িতে ফেরত আসেন এবং ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফের বেরিয়ে যান। তারপর গভীর রাতে এই কাণ্ড।

আরও পড়ুন: ফাগুন রাতে পাত্র ধরতে তেপান্তর মাপল পুলিশ

কিন্তু মন কষাকষির জেরে একেবারে পুড়িয়ে খুন?

রঞ্জিতের বাবা শক্তিপদের বক্তব্য, ‘‘সায়নী, তাঁর পরিবারের ও রঞ্জিতের কয়েক জন বন্ধু মিলে ষড়যন্ত্র করে ওকে খুন করেছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সব জানা যাবে।’’

সায়নী-সহ তাঁর পরিবারের চার জনের পাশাপাশি রঞ্জিতের দুই বন্ধুকেও আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে সায়নীদের পরিবারের কারও প্রতিক্রিয়া এ দিন পাওয়া যায়নি। খানজাদাপুরে তাঁদের বাড়ি ছিল তালাবন্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE