Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গঙ্গা বা ইস্তাহার, ‘ভুয়ো’র ছড়াছড়ি

ভোট-বাজারে ভুয়োর দাপাদাপি! কখনও ভাইরাল ভুয়ো খবর,  কখনও ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪৭
Share: Save:

ভোট-বাজারে ভুয়োর দাপাদাপি! কখনও ভাইরাল ভুয়ো খবর, কখনও ছবি।

সম্প্রতি বাংলারই বিজেপি সমর্থক একটি পেজ থেকে গঙ্গার দু’রকম ছবি দিয়ে একটি কোলাজ শেয়ার করা হয়। উপরের ছবিটি ছিল জঞ্জালে ভরা। তাতে লেখা, কংগ্রেস আমলে গঙ্গা। দ্বিতীয় ছবিটি ছিল পরিচ্ছন্ন গঙ্গার। সেই ছবিতে জুম করে বসানো প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার ছবি। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রিয়ঙ্কা আঁজলা ভরে জল খাচ্ছেন। দ্বিতীয় ছবিটিতে লেখা, মোদীর আমলে গঙ্গা। এই দুই ছবির কোলাজই ওই পেজ থেকে ফেসবুকে অজস্র শেয়ার হয়েছে, ছড়িয়েছে হোয়াটসঅ্যাপেও। কিন্তু শুক্রবার ভুয়ো খবর যাচাই করার একটি সংস্থা পরীক্ষা করে জানায়, ‌গঙ্গায় নৌকাযাত্রায় গিয়ে প্রিয়ঙ্কার সাম্প্রতিক একটি ছবির সঙ্গে ২০১২ সালে গঙ্গার ছবি মিশিয়ে দ্বিতীয় ছবিটি তৈরি হয়েছে। সেটাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়েছে বিজেপি-সমর্থক ওই পেজ।

কেবল সমর্থকরাই নন, ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে বিশিষ্টজন মধু কিশ্বরের বিরুদ্ধেও। ২১ মার্চ মধু একটি টুইটে ডিএমকের সাম্প্রতিক ইস্তাহারের ৮৫ এবং ১১২ পৃষ্ঠা উদ্ধৃত করে দাবি করেন, যাঁরা মন্দিরের দখলে থাকা জমি ভোগ করছেন সেগুলি নথিভুক্ত করে মালিকানা হস্তান্তর করা হবে। একই টুইটে মধু দাবি করেন, ওই ইস্তাহারেই নাকি রয়েছে, ওয়াকফের দখল করা সম্পত্তি উদ্ধার করে ওয়াকফকে হস্তান্তর করা হবে। মধু টুইটটি শেয়ার করার পর থেকেই বিজেপি সমর্থকেরা সেটি শেয়ার করতে থাকেন। যদিও টুইটারেই একজন জানিয়ে দেন, মধুর উদ্ধৃত করা অংশটি ডিএমকে-র ২০১৬-র বিধানসভার ইস্তাহারের অংশ। এবারের ইস্তাহার ৮০ পাতারও কম। ডিএমকে-র তরফেও দাবি করা হয়, মধু টুইটে ভুল তথ্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। মধুর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানানো হয়।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিতর্ক বেধেছে ‘চৌকিদার’দের ভিডিয়ো ঘিরেও। টুইটারে নামের আগে চৌকিদার জুড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বিজেপি নেতার আপলোড করা ২০ মার্চের ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে একদল বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী স্লোগান দিচ্ছেন, ‘‘মোদীজির সঙ্গে আছি, আমরাও চৌকিদার!’’ ভিডিয়োটি নিজে শেয়ার করে নরেন্দ্র মোদী টুইটারে লেখেন, ‘‘রকস্টার চৌকিদার। এটা দেখে খুব খুশি হয়েছি।’’ কেবল ওই ভিডিয়োই নয়, বিজেপি-সমর্থক আরও একাধিক পেজ থেকে এমন নিরাপত্তারক্ষীদের ভিডিয়ো আপলোড করা হয়।

তবে এমন সব ভিডিয়োর স্বতঃস্ফূর্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে একটি ওয়েবসাইট। তাদের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর শেয়ার করা ভিডিয়োয় যে সংস্থার রক্ষীদের দেখা গিয়েছে, সেই সংস্থার মালিক একসময় বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। যদিও সংবাদমাধ্যমে তিনি দাবি করেছেন, সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে দিলেও তিনি মোদীর সমর্থক। তাঁর দাবি, ভিডিয়োয় স্লোগান দেওয়ার জন্য কাউকে জোরাজুরি করা হয়নি।

ভাইরাল হওয়া এমন আরও ভিডিয়োয় যে সব সংস্থার রক্ষীদের দেখা যাচ্ছে, সেই সব সংস্থার কর্ণধারদের মধ্যে বিজেপির এক বিধায়ক ও এক

রাজ্যসভার সাংসদও রয়েছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বিধায়কের দাবি, তাঁর সংস্থার রক্ষীরা যে এমন ভিডিয়ো করেছেন জানতেন না। সাংসদের দাবি, সংস্থার কর্মচারীরা স্বেচ্ছায় ওই ভিডিয়োর জন্য স্লোগান দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE